আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছে পরিস্থিতি তুলে ধরেছে বিএনপি

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছে পরিস্থিতি তুলে ধরেছে বিএনপি

ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাওবক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতের সাজার রায়, কারাগারে পাঠানোসহ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নওশাদ জমির প্রমুখ।

ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়েছেন ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি’র সিনিয়র রিপোর্টার কাদির কল্লোল, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম, জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের ব্যুরো চিফ হারুন উর রশীদ, মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি’র ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম, ভারতীয় গণমাধ্যম জি মিডিয়ার ব্যুরো চিফ রাজীব খানসহ কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা, মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা ও পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিনিধিরা।

ব্রিফিং শেষে বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রিফিংয়ে বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের আইনি ও রাজনৈতিক দিকগুলো অবহিত করেছেন বিএনপি নেতারা। এ সময় রায়কে ঘিরে সারাদেশে আটক হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিও জানান তারা।

ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই রায় দেওয়া হয়েছে খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য। তাকে যে ধারায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে, সেটা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ধারা নয়। তাই দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করা যায়নি বলে দাবি করেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ের সামনেরায়ের আইনি দিকগুলো তুলে ধরে ব্যারিস্টার মওদুদ ও খন্দকার মোশাররফ বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনও সংযোগ নেই। এই মামলার বাকি পাঁচ আসামির ক্ষেত্রে দুর্নীতির সংযোগের কথা বলা হলেও রায়ে খালেদা জিয়ার দুর্নীতির সংযোগের কথা বলা নেই।

বিএনপি নেতারা বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সরকারি তহবিলে এতিমদের জন্য কোনও তহবিল নেই। কুয়েত থেকে আসা টাকা লেনদেন করেছেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। টাকা ছাড় করার জন্য তিনি সরকারকে ব্যবহার করেছেন। সেই টাকার কিছুটা খরচ হলেও বাকিটা ব্যাংকে আছে, যা এখন সুদে-মূলে তিনগুণ হয়েছে। ফলে তহবিল তছরুপের কোনও বিষয় এই মামলায় নেই।

বিএনপি নেতারা বলেন, এই তহবিলে তো গ্র্যাফটিংও (অবৈধ উপায়ে সুবিধা নেওয়া) হয়নি। তাহলে খালেদা জিয়াকে কেন দণ্ড দেওয়া হলো- এই প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেতারা রায়কে অবৈধ, বেআইনি ও আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ের মূল লক্ষ্য খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। কিন্তু সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। সরকার বাধা না দিলে তিনি প্রচলিত আইনেই বেরিয়ে আসবেন।

এ সময় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়কে ঘিরে সারাদেশে বিএনপির সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বিএনপি চেয়ারপারসনসহ সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।

তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার বিষয়ে বিএনপি নেতারা বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই তিনি (তারেক রহমান) এই দায়িত্ব পেয়েছেন। তার ও দলের স্থায়ী কমিটির নেতৃত্বেই দল চলবে।

কেবলমাত্র বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর জন্যই এ ব্রিফিং আয়োজন করা হয়।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/২০১০ঘ.)