তারেক রহমানের জন্মদিন আজ

তারেক রহমানের জন্মদিন আজ

বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রাণপুরুষ, তৃণমূল রাজনীতির প্রবক্তা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৫ সালের এইদিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান।

দেশের স্বাধীনতা-সার্ভভৌমত্ব অক্ষুন্ন ও স্বনির্ভরতা অর্জন করতে গিয়ে দেশি-বিদেশি অপশক্তির ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে দেশপ্রেমিক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শাহাদতবরণ করায় মাত্র ১৫ বছর বয়সেই পিতৃহারা হন তারেক রহমান। দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল থেকে তিনি মাধ্যমিক ও ঢাকার বিএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবিতে এবং পরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষে ভর্তি হন এবং স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তারেক রহমান। শিক্ষাজীবন শেষে ব্যবসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। বস্ত্রশিল্পে বিনিয়োগ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসায় সফলতা লাভ করেন। পরে তিনি নৌ-যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করে সফলতা অর্জন করেন। তারেক রহমান ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান, সাবেক যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রী রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের মেয়ে ডা. জোবায়দা রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র কন্যা জায়মা রহমান সম্প্রতি লন্ডনের কুইনমেরি ইউনির্ভাসিটি থেকে আইন শাস্ত্রে ল’ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।

নন্দিত জননেতা তারেক রহমান কিশোর বয়সে ১৯৮১ সালে পিতাকে হারালেও পড়াশুনার পাশাপাশি স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তার মায়ের সহচর হিসেবে অংশ নেন। পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৮৮ সালে তারেক রহমান বগুড়া জেলার গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য হন। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেয়ার আগেই তারেক রহমান রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির রাজনীতিতে প্রায় নেপথ্যে থেকে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তারেক রহমান। তারই রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, অনবন্ধ পরিকল্পনা ও প্রজ্ঞার কারণে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয় ২০০১ সালের নির্বাচনে। দীর্ঘদিন দলের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কাজে নেপথ্যচারীর ভূমিকা পালন করলেও অবশেষে ২০০২ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পান। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমান সংগঠনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারো ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় কারাগারে প্রেরণ করলে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। সাজানো মামলায় তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিলেও সরকারি নির্দেশে উচ্চ আদালত একটি মামলায় সাজা দিয়েছেন। আরেকটি সাজানো মামলায় তাকে অন্তর্ভুক্তি করে সাজা দেয়া হয়েছে।

এক-এগারোর সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ কারারূদ্ধ হন তারেক রহমান। ওয়ান-ইলেভেনের সেই সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকার তাকে গ্রেফতারের পর নির্মম নির্যাতন করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০০৮ সালে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। সেই থেকে সপরিবারে তিনি সেখানেই বাস করছেন। তার সাথে আছেন সহধর্মিণী ডা: জোবায়দা রহমান, একমাত্র কন্যা জায়মা রহমান।

জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা, মহানগর থানা ও উপজেলা পর্যায়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ ও অন্যান্য কর্মসূচি গ্রহণ করছে।

আজ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোয় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল ২১ নভেম্বর নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।

জন্মদিন উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন দুঃশাসনে দেশ আজ ধ্বংসের সর্বশেষ প্রান্তে উপনীত হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা আজ হুমকির মুখে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলে আবারো একদলীয় শাসনের নিষ্পেষণে গোটা জাতিকে বন্দী করা হয়েছে। এই দুঃসময়ে তারেক রহমানের নিঃশঙ্ক মনোবল ও দৃঢ় নেতৃত্ব দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে উজ্জীবিত করছে।

এমজে/