খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে দেশবাসী আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে : রিজভী

খালেদা জিয়ার  জামিন নিয়ে দেশবাসী আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে টালবাহানা না করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন, তাকে সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে ৬৬৫ দিন হলো অবৈধ ক্ষমতার জোরে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আইন-আদালত, ন্যায় বিচার, সংবিধান, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, বয়স, অসুস্থতাসহ সকল বিবেচনায় চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়া আইনগত অধিকার।

রিজভী আজ বুধবার দুপুর ১২ টায় বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, দেশ-বিদেশের আইনজ্ঞরা বলছেন, এই মামলায় জামিন না পাওয়া বিস্ময়কর। তিনি নিশ্চিতভাবেই জামিনের হকদার। গোটা বাংলাদেশের মানুষ অব্যাহতভাবে দাবী জানাচ্ছে তার জামিনের। অথচ স্বাভাবিক এই জামিন নিয়ে কত রকমের টালবাহানা করা হচ্ছে! সরকার দলীয় লোকেরা প্রকাশ্যে হুমকি ও ঘোষণা দিয়ে জামিনে বাধা দেয়া হচ্ছে। তাকে জেলে রেখে হত্যার হুমকিও দেয়া হচ্ছে।

রিজভী বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি করবেন। আগামীকালের মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন দিতে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৭৫ বছর বয়সী নেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা এতো ভয়ঙ্কর যে, এই মুহূর্তে তাকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না হলে জীবনহানির চরম ঝুঁকি রয়েছে। সুচিকিৎসার অভাবে তার যে ড্যামেজ হচ্ছে, সেটা আর ফিরে আসবে না। তার বাম হাত ও শরীরের বাম দিক প্রায় প্যারালাইজড হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কারও সাহায্য ছাড়া তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না।

তার এই গুরুতর অসুস্থতায় দেশবাসী শুধু উদ্বিগ্নই নই, বরং জামিনে বাধা দিয়ে ও চিকিৎসা না দিয়ে তাঁকে গুরুতর শারীরিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য এটি যে সরকারের অশুভ পরিকল্পনারই অংশ তা জনগণ বিশ্বাস করে। তাকে নিয়ে সরকারের অশুভ ষড়যন্ত্রের আরেকটি জলজ্যান্ত প্রমাণ হলো গত ২৫ দিন ধরে তাঁর সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হচ্ছে না। এটি জেলকোডের চরম লঙ্ঘন। এটির মাধ্যমে বিধি-বিধানকে উপেক্ষা করে প্রতিহিংসার বিধানকেই চরিতার্থ করা হচ্ছে। গত ১৩ নভেম্বরের পর থেকে আর সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। আমরা বর্তমানে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে চরম আশংকায় দিনাতিপাত করছি।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি উচ্চ আদালত থেকে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। বেগম খালেদা জিয়া দেশের সিনিয়র সিটিজেন, চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দুইবারের বিরোধী দলীয় নেতা ও দেশের জনপ্রিয় শীর্ষ রাজনীতিবিদ এবং গুরুতর অসুস্থ, তাই তাঁর জামিন পাওয়া ন্যায়সঙ্গত অধিকার। ইতোপূর্বে এধরণের মামলায় উচ্চ আদালত থেকে অনেকেই জামিন পেয়েছেন, সেটির অসংখ্য নজীরও রয়েছে। গোটা দেশবাসী আগামীকাল তার ন্যায্য জামিন প্রাপ্তির অপেক্ষায় উচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে।

এমজে/