আ’লীগের ভেতরে থাকা রাজাকারদেরও তালিকা হওয়া দরকার: গাফফার চৌধুরী

আ’লীগের ভেতরে থাকা রাজাকারদেরও তালিকা হওয়া দরকার: গাফফার চৌধুরী

আওয়ামী লীগের ভেতরে যারা রাজাকার রয়েছে, তাদেরও তালিকা হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী। রাজাকারের তালিকা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘অনেক রাজাকার। একজন দুজন নয়, এখনো আছে। তাদের নাম বলে কোনো লাভ নেই। এমনকি আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার আশপাশেও আছে। এই গণভবনে অনেক কিছু হচ্ছে। এখন তাদের নাম বললে আমার আর ঢাকায় আসা হবে না। তাদের নাম বলতে চাই না। এই হচ্ছে অবস্থা। রাজাকারদের তালিকা করবেন, দেখা যাবে রাজাকাররাই সেই তালিকা তৈরি করতেছে। তাদের মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার এবং রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধা।’

সম্প্রীতি, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির বিজয় শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব।

এদিকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রথম পর্বে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকা পাওয়া যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (molwa.gov.bd)।

আজ রোববার দুপুরে সচিবালয় সংলগ্ন সরকারি পরিবহন পুল ভবনের ছয় তলায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই তালিকা প্রকাশ করার কথা জানান মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘যারা রাজাকার হিসেবে সরকারি গেজেটভুক্ত হয়ে পাকিস্তানি আর্মির সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের তালিকা এটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই তালিকা সংরক্ষিত ছিল, সেখান থেকে আমরা সংগ্রহ করেছি। আজ থেকে এটি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।’ এ তালিকার রাজাকাররা কে কোন দলে আছেন, এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

এর বাইরেও রাজাকারদের নাম প্রকাশ করা হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ওই সময় যে পুরোনো ১৯ জেলা ছিল, সেসব জেলা সদরে আমরা চিঠি দিয়েছি। সেখানে কোনো রেকর্ড অথবা গেজেট যদি থাকে, সেগুলোও পাঠাতে বলা হয়েছে। সেগুলো যাচাই করে আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে আমরা প্রকাশ করব।’

এক সঙ্গে কেন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হলো না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এর আগেই ওই জেলাগুলোকে তাগাদা দিয়েছিলাম। কিন্তু সাড়া পাইনি।’

এই তালিকা অনুযায়ী রাজাকারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এটা সামাজিক সচেতনতা ও জনগণকে অবহিত করার জন্য। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ এখন নেই। যদি গেজেট প্রকাশ করা হয়, তাহলে মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে এবং পার্লামেন্টে পাস করাতে হবে।’