পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি

মেয়র প্রার্থী আতিকুলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

মেয়র প্রার্থী আতিকুলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউশন (ইটিআই) ভবনে উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেমের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের সঙ্গে শতাধিক নেতা-কর্মী আসেন। তাদের ছোট একটা অংশ ইটিআই ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। নেতা-কর্মীদের বড় অংশ ইটিআই ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। ইটিআই ভবনে প্রবেশ করতে তার নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ জোর করে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তখন গেটে দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।

ঘটনাস্থলের খবর নিয়ে জানা যায়, রিটার্নিং কর্মকর্তার কক্ষেও অতিরিক্ত লোকজন নিয়ে প্রবেশ করেন মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম। তখন তাদের লোকজনই ৫ জন ভেতরে থেকে বাকিদের বাইরে বেরিয়ে যেতে বলেন। বলার পরও ৫ জনের বেশি লোক দেখা যায় কক্ষে।

এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভেতরেই সংবাদ সম্মেলন করেন আতিকুল। তখনও তার সঙ্গে ৫ জনের বেশি লোকজন অবস্থান করেন। এমন কি এক প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেও ফেলেন তার সঙ্গে অতিরিক্ত লোক রয়েছে। আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে আমাদের আওয়ামী লীগের সভাপতি আছেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের বজলুর, এস এম মান্নান কচি আছেন এবং আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীরাও আছেন এখানে।’

এরকম পরিস্থিতি সংবাদ সম্মেলনেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি পাঁচজন। বাইরে থাকলেও কোনো শোডাউন হয়নি।’

তখন এক সাংবাদিক বলেন, ‘স্লোগান হয়েছে।’ উত্তরে এই মেয়রপ্রার্থী বলেন, ‘যখন হয়েছে, তখন সাথে সাথে বন্ধ করে দিয়েছি।’

‘আমরা চেষ্টা করেছি, মাস পিপলের মধ্য থেকে আমরা একটা কন্ট্রোলের মধ্য থেকে নিয়ে এসেছি। এ ছাড়াও আজকে শুধু আমি না, আমাদের অনেক কাউন্সিলরও কিন্তু ফরম জমা দিচ্ছে। ইট ইস নট অনলি ফর মি’, যোগ করেন আতিকুল।

ইসি সূত্র জানায়, একজন নির্বাচন কমিশনার প্রার্থীদের শোডাউনের কারণে যানজটে আটকা পড়েন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘১ হাজার জন প্রার্থী ৫ জন করে নিয়ে এলেও ৫ হাজার জন হয়। তবে আমরা তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা রেখেছি। অনেকে ৫ জনও না এনে তিনজন নিয়ে এসেছে।’ তার দাবি, কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ১১ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শো-ডাউন করা যাইবে না বা প্রার্থী ৫ জনের অধিক সমর্থক লইয়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।’

শাস্তি বিষয়ে এই বিধিমালার ৩০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোন প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন-পূর্ব সময়ে এই বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন করিলে অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।’

গতকাল সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) থেকে প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মনোনয়ন গ্রহণ ও জমার বিষয়ে অভিযোগ উঠতে থাকলেও এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমন কি অভিযোগ তদন্তে কোনো ধরনের কমিটিও গঠন করা হয়নি।