চট্টগ্রামে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রামে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রাম, ৩ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : চট্টগ্রামের কদমতলী এলাকায় পরিবহন ব্যবসায়ী ও সদরঘাট থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে সদরঘাট থানাধীন কদমতলীতে নিজের অফিসে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের সময় স্থানীয় যুবলীগের একটি আনন্দ মিছিল ঘটনাস্থল অতিক্রম করে। মিছিলটি হারুনের অফিস অতিক্রম করামাত্র কয়েকটি গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এরপর গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হারুন।

নিহত হারুন চৌধুরী চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দস্তগীর চৌধুরীর বড় ভাই ব্যবসায়ী আলমগীর চৌধুরীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুই সপ্তাহ আগে কয়েকজন ব্যক্তি কদমতলী এলাকায় পরিবহন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতে আসে। এ সময় হারুন চৌধুরীসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের বাধা দেন। এ ঘটনার জের ধরে হারুন চৌধুরীকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সন্ধ্যায় হারুন চৌধুরী কদমতলীতে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিচে বসে ছিলেন। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে তাকে কয়েকটি গুলি করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের (পশ্চিম মাদারবাড়ী) কাউন্সিলর গোলাম মো. জোবায়ের বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় বিকালে শুভপুর বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশের আয়োজন করে স্থানীয় যুবলীগ। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি কদমতলী ঘুরে আসার পর গুলির শব্দ শুনেছি। পরে জানলাম হারুনকে গুলি করা হয়েছে।

জোবায়ের বলেন, তিনি সমাবেশে অংশ নিলেও মিছিলে অংশ নিতে পারেননি। মিছিলে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের (পাঠানতলী) কাউন্সিলর আবদুল কাদের, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের (ফিরিঙ্গিবাজার) কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা হাসান মুরাদ বিপ্লব ও সাইফুল ইসলাম লিমনও অংশ নেন।

হাসান মুরাদ বিপ্লব জানান, তিনি অতিথি হিসেবে ওই মিছিলে ছিলেন। মিছিলটি শুভপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কদমতলী হয়ে আবার একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষ হলে এক যুবককে (হারুন) মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে তিনি ট্যাক্সিতে করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন বলে জানান।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা শরীফ এই সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করেন বলে জানান হাসান মুরাদ বিপ্লব।

সিএমপির সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম জানান, শুভপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে যুবলীগের সভা শেষে মিছিল বের হয়। এটি কদমতলীর হত্যাকাণ্ডের স্থান অতিক্রম করে আবার একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। দুর্বৃত্তরা মিছিলের সঙ্গে এসে এ ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত নয় পুলিশ।

এদিকে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর হত্যাকাণ্ডের জন্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, নিহত হারুন সদরঘাট থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে।

নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দস্তগীর চৌধুরীর স্ত্রী ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর জানান, তার ভাসুরের ছেলেকে যুবলীগের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তিনি এর বিচার চান।

(জাস্ট নিউজ/একে/২০২৯ঘ.)