সিটি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই: খন্দকার মোশাররফ

সিটি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই: খন্দকার মোশাররফ

আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সোমবার বেলা সোয়া ১১ টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।

মোশাররফ বলেন, আজকে আমরা আমাদের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উত্তর এবং দক্ষিণের তাবিথ আউয়াল এবং ইশরাক হোসেনকে নিয়ে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে আমরা আজকে চতুর্থ দিনের প্রচার অভিযান শুরু করেছি। আপনারা জানেন যে আজকে আমরা চতুর্থ দিন প্রচারের দিন ঢাকা মহানগরের এই নির্বাচনে আমরা প্রথম থেকেই দেখছি যে আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম একটি নির্বাচনে যদি জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে হয় তাহলে লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকতে হয়, কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সরকারের পক্ষ থেকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে লেভেল প্লেইং ফিল্ড করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা রাস্তায় দেখছি নির্বাচনী আইনে লেখা আছে দেওয়ালে পোস্টার লাগানো যাবে না এবং রঙিন পোস্টার লাগানো যাবে না। অথচ আমরা এই দুই সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পোস্টার এবং রঙিন পোস্টার দেয়ালে দেখছি। নির্বাচন কমিশন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হয়নি। আমরা আশা করি জনগণ যাতে, ঢাকাবাসী যাতে তারা নিজের ভোটটা নিজে দিতে পারে। নিজের হাতে দিতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে হবে। আর আমাদের দাবি জনগণ নিজের হাতে ব্যালটের মাধ্যমে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। তাদের মতামত প্রকাশ করতে চায়। তাই ইভিএম আমরা মানিনা। ইভিএমকে বাতিল করে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে আবার আমরা নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানাচ্ছি।

মোশাররফ বলেন, আপনারা দেখছেন আমাদের প্রচার অভিযানে যারা সরকার দলের প্রার্থী তারা আমাদের বিভিন্ন প্রচার অভিযানে বাধা সৃষ্টি করছে। আমাদের বিভিন্ন প্রচার অভিযানে হামলা করা হচ্ছে। আমাদের বিভিন্ন কাউন্সিলরদের বাড়ি আক্রমণ করা হচ্ছে। কাউন্সিলরদের কে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে এবং প্রচার এর মাইক ছিনতাই করা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা যেহেতু মধ্যমপন্থী গণতান্ত্রিক দল। আমরা জানি এই ভোট ডাকাতির সরকার এবং তাদের পদলেহী নির্বাচন কমিশন কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে না। তবুও আমরা একটা গণতান্ত্রিক এবং মুদ্যবন্থি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। সেই গণতান্ত্রিক পরিবেশ যদি বজায় না থাকে তাহলে সেটা সফল হবে না।

তিনি বলেন, জনগণ আছে, জনগণ দেখছে। আমরা যদি, জনগণ যদি সুষ্ঠুভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং হয় মুক্ত ভাবে ভোট দিতে পারে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের উভয় মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা আমাদের বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে, জয়যুক্ত হবে। সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন সকল কারণে দুর্নীতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ যেভাবে একটা বিষাক্ত শহরে পরিণত করেছে। এই শহরের মানুষ আগামী নির্বাচনে আমাদের দুই মেয়রের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য আমাদের কাউন্সিলরদের ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তাই জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা করার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। এই নির্বাচনকে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, আমরা ঢাকাবাসী কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, জানি আপনারা এই সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ। আপনারা পরিবর্তন চান। পরিবর্তনের স্বার্থে নির্বাচনে কেন্দ্রে এসে ভোট দিবেন। যত ষড়যন্ত্র থাকুক না কেন। যত রকমের বাধা থাকুক না কেন। তা উপেক্ষা করে আপনারা দয়া করে ভোট কেন্দ্রে এসে পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবেন। জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে ভোট দেবেন। এই সরকারের হাত থেকে এদেশের মানুষকে রক্ষা করা ঢাকাবাসীকে রক্ষা করার জন্য আমাদের দুই মেয়র প্রার্থীকে ধানের শীষে ভোট দেবেন এবং আমাদের যারা সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের পক্ষে ভোট দেবেন। এই আহবান আমি ঢাকাবাসীর কাছে রাখছি।

এ সময় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মোঃ শাহজাহান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, যুগ্ম সচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কাবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।