দেশে একনায়কতন্ত্র আর ফ্যাসিবাদ চলছে, হত্যা করা হয়েছে গণতন্ত্রকে: মির্জা আলমগীর

দেশে একনায়কতন্ত্র আর ফ্যাসিবাদ চলছে, হত্যা করা হয়েছে গণতন্ত্রকে: মির্জা আলমগীর

দেশে একনায়কতন্ত্র আর ফ্যাসিবাদ চলছে, হত্যা করা হয়েছে গণতন্ত্রকে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখন দেশে গণতন্ত্র নেই। একনায়কতন্ত্র ফ্যাসিবাদ দেশকে দখল করে আছে। আমরা যদি ভারতবর্ষের দিকে তাকাই। যেখানে বলা হতো গণতান্ত্রিক প্রাক্টিস আছে। সেখানেও দেখা যাচ্ছে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, চ্যানেল বন্ধ করা হচ্ছে, কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, পৃথিবীর দিকে তাকালে গত এক দশকে গোটা পৃথিবীতে কর্তৃত্ববাদী সরকার এসেছে। এর ফলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এ অবস্থায় অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে এগিয়ে যেতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগোতে হবে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই সরকার যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসেনি তাদেরকে সরিয়ে দেয়ার জন্য। তাই সময় এসেছে উঠে দাঁড়াবার, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করবার, গণতন্ত্রকে রক্ষা করবার, এটিই আমাদের উপযুক্ত সময়। জনগণের লড়াই সংগ্রামে সাংবাদিকরা সবসময় সামনের কাতারে ছিলেন। আমরা তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়। এখানে বলা হয়েছে ৩৮ জন সাংবাদিক গুম হয়েছেন। চাকরির নিশ্চয়তা নেই। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার বছরের পর বছর ঝুলে আছে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে ছাঁটাই হচ্ছে। সাংবাদিকরা কাজ করতে পারছে না। অথচ দেখছি দু-একজন সাংবাদিক নেতা বহু উপরে উঠে গেছেন। এটাই বাস্তবতা।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এই দেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। এই ঘনবসতিপূর্ণ দেশে যেকোনো সময় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

ফখরুল আরও বলেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন যখন হচ্ছে তখন যখন সাংবাদিকতাকে সম্ভবত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো রাষ্ট্রের কাঠামো ও সরকারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এছাড়া প্রযুক্তির কারণেও চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে। পত্রিকায় এ যারা কাজ করছেন তারা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন, কারণ পরের দিন সকালে যখন তাদের নিউজটি ছাপা হয় তার আগেই মোবাইল বা অনলাইনে সেই খবরগুলো পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সাংবাদিকদের সব সময় শ্রদ্ধার চোখে দেখে। বাংলাদেশের ভাষার জন্য গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে স্বাধীনতার লড়াইয়ে তাদের ভূমিকা ছিল অভূতপূর্ব। আজ অনেক সাংবাদিক বলছেন। আমাদের কি সাংবাদিকতা ছেড়ে দিতে হবে! তারা ভাবছেন যারা সাংবাদিক হিসেবে যারা ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করছি আমরা তারা মনে হয় ভুল করেছি। কারণ এখানে নিরাপত্তা নেই। আর্থিক নিরাপত্তা নেই। সর্বোপরি লেখা ছাপা হবার পর মামলা হবে না, গুম হয়ে যেতে হবে না তার নিশ্চয়তা নেই।

ডিইউজে একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরীর সভাপতিত্বে যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ, এমএ আজিজ, আব্দুস শহীদ, আব্দুল হাই শিকদার, বাকের হোসাইন, শহিদুল ইসলাম, জামায়াত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এমজে/