দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে আগামীকাল বুধবার মুক্তি পেতে পারেন তিনবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি গুলশানে অবস্থিত নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’য় উঠবেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দর। তিনি জানান, তার বোন মুক্তি পাওয়ার পর নিজের বর্তমান বাসভবন ফিরোজাতেই উঠবেন।
এর আগে বিকেলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ ক্ষেত্রে তাকে দুটি শর্ত মানতে হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপধারা-১-এ বেগম খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা গ্রহণ করার শর্তে, এই সময় দেশের বাইরে গমন না করার শর্তে মুক্তি দেওয়া জন্য আমি মতামত দিয়েছি।’
এদিকে, দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির পর বিএনপি কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা জানাতে পারেননি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র বিষয়টি জেনেছি। এখনও এ বিষয়ে আলোচনা করিনি। তবে আমরা তো ম্যাডামকে বিদেশে নিতে চেয়েছিলাম। এই অবস্থায় কী করা যায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।’
সরকারের নেয় সিদ্ধান্তের পর বিএনপির পরবর্তী করনীয় অনলাইন মাধ্যমে জানানো হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমে জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের কথা তুলে ধরবেন। একইসঙ্গে সরকারের এই সিদ্ধান্ত পরবর্তী করণীয় কী হবে, তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলবেন। তবে, তা প্রচার হবে অনলাইনে। বিএনপির দলীয় অফিসিয়াল ফেসবুকে তা প্রচার হবে।
এদিকে, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলেই কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান। তিনি বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ফাইল হাতে পেয়েছি। মুক্তির ফাইলের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা আজ সম্ভব হবে না। তবে আশা করি আগামীকালের (বুধবার) মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।’ সে মোতাবেক আগামীকালই খালেদা জিয়ার মুক্তি হতে পারে বলে আশা করছে বিএনপি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজা পেয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্যগত অবস্থার অবনতির কথা উল্লেখ করে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দুই দফায় জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এমজে/
