হামলা-মামলায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রুদ্ধ করা যাবে না: রিজভী

হামলা-মামলায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রুদ্ধ করা যাবে না: রিজভী

ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : ‘রাজনৈতিক দমনমূলক হামলা-মামলায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে রুদ্ধ করা যাবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করার পর দেশবাসী জেগে উঠেছে। সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে লাখো মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে। সারাদেশব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। এতেই সরকারের ভীত নড়বড়ে হয়ে উঠেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

বহস্পতিবার বিকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচী ঘোষণা দেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু ও বেলাল হোসেন প্রমুখ।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে যতো অপকৌশলই সরকার করুক না কেন আগামী জাতীয় নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়াকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না। বেগম খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না এবং দেশের জনগণ তা মেনেও নেবে না।

দেশনেত্রীকে নির্বাচন থেকে মাইনাস করার উদ্দেশ্যেই সরকার নীলনকশা এঁটে বেগম জিয়াকে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করেছে বলেও দাবি করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘এটি এখন জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, গণতন্ত্রশূন্যতার কারণেই ক্ষমতার ভারসাম্য বলে কিছু নেই। একজনের ক্ষমতাই সর্বব্যাপী। আইন, বিচার, আদালত ‘সর্বত্রই শেখ হাসিনার ছায়াশাসনের আওতাভুক্ত’। আওয়ামী সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমন করার জন্যই একের পর এক সাজানো মামলায় একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, যারা বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকে তাদেরকে অবলম্বন করতে হয় অনাচারের ওপর। এই অনাচারে একদিকে যেমন চলছে জবরদখল, খুনের ভয়, রক্তপাত, চাঁদা আদায়ের দাপট ও বেঘোরে জীবনহানির নিরাপত্তাহীনতার মাধ্যমে নাগরিকদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করা, অন্যদিকে অনাচারের একটি কুৎসিত দিক হচ্ছে- প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্য দিয়ে দেশকে আদিম অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া।’

মন্ত্রী ও সচিবকে বাঁচাতে নকলের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন দাবি করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘পরীক্ষার দুই ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং শিক্ষামন্ত্রীর সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতি করার পরামর্শ, একথাগুলো যেন আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার ইশতেহার। মন্ত্রী ও সচিবকে বাঁচাতে নকলের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন। যেমন শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্রয় দিতে সহনীয় মাত্রায় দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে। এটি জাতির ভবিষ্যতের জন্য এক অশুভ বার্তাবহ।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট আরো বেশি উৎসাহিত হয়ে উঠেছে। গত দুই দিনেও জীববিজ্ঞানসহ কয়েকটি সাবজেক্টে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা সেটিই প্রমাণ করে। পৈশাচিক অনাচারের ধারাবাহিকতায় গুম-খুনের হিড়িকে প্রধানমন্ত্রী জনগণের রক্ত-মাংস-হাড় ও শিক্ষা ধ্বংসের বিনিময়ে গড়তে চাচ্ছেন এক অলৌকিক ক্ষমতার দেউল।’

এসময় তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক হাজী নাজিম, ৯নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের নেতা আবু নোমানসহ পাঁচজন, ওয়ারী থানা বিএনপির ৩৮নং ওয়ার্ড-এর সহ-সভাপতি নুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি আটককৃত সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯১০ঘ.)