গরিবের অনুদান নয়, ব্যবসায়ীদের ঋণ প্যাকেজ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: মির্জা আলমগীর

গরিবের অনুদান নয়, ব্যবসায়ীদের ঋণ প্যাকেজ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: মির্জা আলমগীর

গরিব মানুষের জন্য অনুদান নয়, ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি দিয়ে চলমান সংকট নিরসন হবে না- এমনটিই মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (৫ এপ্রিল) বিকালে উত্তরায় নিজ বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনটি বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সরাসরি প্রচার করা হয়।

মির্জা আলমগীর বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম আরও অ্যালাবোরেট কিছু করবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তা তিনি করেননি। তিনি অনেকগুলো বিষয় এড়িয়ে গেছেন। জাতি তার কাছে এমনটি আশা করেনি।’

‘এই মুহূর্তে সারাদেশ পুরোপুরি লকডাউন করার প্রয়োজন আছে কী’?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সেটি প্রয়োজন। এখনই পুরোদেশ লকডাউন করা দরকার। আমরা মনে করি, একাত্তরে যেভাবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, এবারও সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব। তবে তার জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।’

এর আগে, করোনাভাইরাসজনিত বৈশ্বিক মহামারির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য মহাদুর্যোগ মোকাবিলায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজ প্রস্তাবনা দেয় বিএনপি। এই প্রণোদনা প্যাকেজের ৬১ হাজার কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদী খাতে, ১৮ হাজার কোটি টাকা মধ্যমেয়াদী খাতে এবং ৮ হাজার কোটি টাকা অদৃশ্য ও অন্যান্য খাতে ব্যয় করার প্রস্তাব দেয় দলটি।

শনিবার (০৪ এপ্রিল) সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এ প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস নিয়ে দলের বক্তব্য তুলে ধরেছি। এখন আমরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের জন্য কতগুলো পদক্ষেপ এর প্রস্তাব রাখছি। তারমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে স্বল্প মেয়াদে অনতিবিলম্বে, আর সময়ক্ষেপণ না করে। কিছু মধ্য মেয়াদে এবং কিছু দীর্ঘ- মেয়াদে।’

‘আমাদের প্রদত্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির ৩% অর্থ সমন্বয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল ঘোষণা করতে হবে। শাটডাউন প্রত্যাহার হলে নতুন করে একটি সংশোধিত আর্থিক প্যাকেজ প্রদান করতে হবে যেন সকল সেক্টরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সাধারণ ছুটি-পুর্ব স্তরে ফিরে আসতে সক্ষম হয়’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর ঠিক ২২ ঘণ্টা পর রবিবার (০৫ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের কারণে আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় মোট ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী চারটি প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

এর মধ্যে শিল্প-কারখানার জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পসহ মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ সুবিধা। অন্যান্য খাতে বাকি সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।