এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতকে অবহেলা করা হয়েছে: রিজভী আহমেদ

এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতকে অবহেলা করা হয়েছে: রিজভী আহমেদ ফাইল ছবি

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্ধেই সরকারের অবেহলা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বৃহস্পতিবার সকালে দলীয় এক ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচির অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই যে বিশ্বব্যাপী মহামারীর কবলে গোটা বাংলাদেশ আজকে যে ভয়াবহ অবস্থা এখানে সরকারের অগ্রাধিকার যে খাত সেই খাতের মধ্যে ৭ নাম্বারে রাখা হয়েছে স্বাস্থ্যখাতকে। গতবছর ছিলো ১০ হাজার কোটি টাকা, এই বছর রাখা হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। এখনো এই স্বাস্থ্যখাতের ব্যাপারে সরকারের কোনো নজর নেই।

এডিপিতে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্ধ নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী আহমেদ বলেন, সাংবাদিকরা পরিকল্পনা মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেছিলো, এই যে মহামারী, হাসপাতালে যন্ত্রপাতি নাই, স্বাস্থ্য সেবা নাই- এখানে স্বাস্থ্যখাত সরকারের অগ্রাধিকার এতো নিচে কেনো? পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেছেন, আমরা টাকা বাড়ালেও সেটা বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই। তাহলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত, বাংলাদেশের মেডিকেল হাসপাতাল, বাংলাদেশের সব কিছু অক্ষমরা চালাচ্ছে এবং এই সরকারের কারণেই অক্ষমদের হাতে আছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত। এরকম পরিস্থিতি চলতে পারে না।

স্বাস্থ্যখাতে সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী আহমেদ বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা খুব উষ্মা প্রকাশ করেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন, আমরা দায়িত্ব নিয়ে কথা বলি না, তথ্যমন্ত্রী প্রতি সময়ে বিষেধাগার করছেন। আপনারা কই তো কোনো কিছুর সমাধান করতে পারেননি। আজকে হাসপাতালে ভেন্টিলেটর নাই, অক্সিজেনের সিলিন্ডার নাই, যে যন্ত্র অক্সিজেন দেবে সেই যন্ত্র নাই। যে অক্সিজেন মাস্ক লাগে সেই মাস্ক ৪০% হাসপাতালে নাই। এগুলো কী ব্যর্থতা নয়?

তিনি আরো বলেন, এই ব্যর্থতার কারণেই তো করোনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। এই ব্যর্থতা তো সরকারের। এই ব্যর্থতার সমালোচনা করলেই তারা (সরকার) খুব মন খারাপ করেন, তারা রাগান্বিত হন। যারা এসব বিষয় নিয়ে ফেইসবুকে লেখেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে, গ্রেপ্তার করে। ফেসবুকে লেখার কারণে কাল গাজীপুরে পলাশ নামে একটি ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা-মোকাদ্দমায় তারা সিদ্ধহস্ত। কে কোন বিষয়ে কি লেখছেন তাদের সরকারের নজরদারি রয়েছে অথচ করোনাকে প্রতিরোধ করার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেয়া হবে এই ব্যাপারে তাদের কোনো নজর নাই।

দুঃস্থ ও দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ সামগ্রী এবং দুঃস্থদের জন্য দেয়া সরকারি অর্থ ক্ষমতাসীনরা লুটপাট করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, আজ দক্ষিণ বাড্ডার ৯৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মহানগর উত্তর সভাপতি এম এ কাইয়ুমের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এই সময় রিজভী ছাড়াও মহানগর উত্তর সহ-সভাপতি আবুল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক এজিএম শামসুল হক, ৯৭ নং ওয়ার্ডের সভাপতি রাশেদ আলম মনু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এরপর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে দুঃস্থদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন রিজভী। এই সময় মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তাঁতী দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম প্রমুখ নেতারা ছিলেন।