র‌্যাবের অভিযান শুরুর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন সাহেদ  

সাহেদ করিম আ’লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির বৈঠকে আসতেন: রাষ্ট্রদূত জমির

সাহেদ করিম আ’লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির বৈঠকে আসতেন: রাষ্ট্রদূত জমির

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম প্রায়ই আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির বৈঠকে যোগ দিতেন।তিনি দলটির সাবেক একটি কমিটির সদস্যও ছিলেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির এমন দাবি করেছেন বলে রিপোর্ট করছে বাংলা দৈনিক, প্রথম আলো। সাহেদের সঙ্গে ছবি আছে বা যোগাযোগ ছিল এমন চার–পাঁচজনের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। যারা অনেকেই এখন সাহেদের সঙ্গে পূর্ব পরিচয়কে অস্বীকার করছেন।

মোহাম্মদ জমির বলেন, সাহেদ করিম মাঝে মাঝে আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির বৈঠকে আসতেন। তিনি সাবেক একটি কমিটির সদস্য ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, তার সঙ্গে (সাহেদ) কমিটির বৈঠকে দু–চারবার দেখা হয়েছে। আর দেখা হয়েছে টিভির টক শোতে।

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ‘হাত’ করতে ব্যবহার করেছিলেন টক শো আর হাসপাতাল ব্যবসা। হাসপাতালে র‌্যাবের অভিযান শুরুর পর তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রভাবশালীদের কারও কারও কাছে ফোনও করেন। বুধবার পর্যন্ত তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে পেরেছেন। র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার আছেন রিজেন্ট গ্রুপ ও হাসপাতালের বেতনভোগী সাত খুদে কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

সাহেদের সঙ্গে ছবি আছে বা যোগাযোগ ছিল এমন চার–পাঁচজনের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাদের প্রত্যেকের কাছেই প্রশ্ন ছিল, মো. সাহেদকে তারা কীভাবে চেনেন। তারা বলেছেন, তিনি টক শোর পরিচিত মুখ। তাঁদের কাছে গিয়ে তিনি নিজেই বলেছেন, কোভিড–১৯–এর চিকিৎসায় দুটি হাসপাতাল ছেড়ে দিয়েছেন। তারা স্বচ্ছন্দে রোগী পাঠাতে পারেন। গণমাধ্যমে উপস্থিতি ও জোরালো বক্তব্য দেওয়ায় অনেকেই তাকে ‘খাঁটি’ লোক ভেবেছিলেন। তারা রোগীও পাঠিয়েছেন। কোনো কোনো সংবাদকর্মী তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। এই পরিচয়ের আড়ালে তিনি তাঁর প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে গেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সাহেদ করিম বেশ কয়েকবার সচিবালয়ে গেছেন। একদিন বললেন, তিনি দুটো হাসপাতাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। রোগী থাকলে যেন পাঠাই। আমি সেখানে রোগী পাঠিয়েছি। একজন ইন্তেকাল করেছেন, বাকিরা সেরে উঠেছেন।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, করোনা মহামারির আগে তিনি সাহেদ করিমকে চিনতেন না। র‌্যাবের অভিযানের পর সাহেদ করিম তাকে ফোন করেছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তার কিছু করার নেই।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছবি আছে সাহেদের। কত দিন ধরে তিনি সাহেদকে চেনেন, এ বিষয়ে জানতে চেয়ে খুদে বার্তা দিলেও তিনি সাড়া দেননি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি সাহেদ করিমকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না। কেউ কখনো ছবি তুলতে চাইলে তিনি না করেন না। এ ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক শহীদুল হকের কার্যালয়ে একসময় সাহেদের যাতায়াত ছিল। শহীদুল হক বলেন, সাহেদ করিম একবার তার কার্যালয়ে এসেছিলেন। তার হাসপাতালের নামে একটা মামলা হয়েছিল সেটার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার তদবির নিয়ে। ওই সময়ে সাহেদ তাঁকে বলেছিলেন, তিনি ক্যানসারের রোগী। সন্তান ছোট। এরপর বিভিন্ন সময় তিনি ফোন করেছেন। তবে সাহেদ করিমকে তিনি চিনতেন টক শোর কারণে।-প্রথম আলো

এসজে/