বিরোধী দলকে অধিকারবঞ্চিত করছে সরকার : আমীর খসরু

বিরোধী দলকে অধিকারবঞ্চিত করছে সরকার : আমীর খসরু

ঢাকা, ৭ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : ক্ষমতাসীন সরকার নিজেরা সভা-সমাবেশ করলেও বিরোধী দল তথা বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে না দিয়ে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১২তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এবং দলটির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। স্বাধীনতা ফোরাম এই সভার আয়োজন করে।

সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তৃতা দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়, কৃষকদলের শাহজাহান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।

সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা, সরকারি কর্মকর্তা ও সরকারের সাথে যারা সম্পৃক্ত তারাও জনসভায় আসছেন। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কারণ আমরা স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ চাই। সুতরাং আজকে যারা ক্ষমতাসীন দল তারা জনসভা করবে, এখানে কোনো ভিন্ন মত থাকার কারণ নাই।

আমীর খসরু বলেন, এই সরকার আমাদেরকে গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। তারা সভা সমাবেশ করছে আর আমাদেরকে অনুমতি পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না। তিনি অবিলম্বে সরকারকে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানান।

বিভিন্ন জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে জনগণকে ওয়াদা করাচ্ছেন মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থী এবং অনৈতিক কাজ ও ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থী। আমরা কিন্তু কাউকে শপথ পড়াবো না। কারণ আমার ভোট আমি কাকে দিবো এটা একটি গোপনীয় বিষয় এবং আমানত। এমনকি আমার স্ত্রীও জানতে পারে না।

তিনি সরকারের একনীতির সমালোচনা করে বলেন, আমরা ১২ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু আজ অবধি সেই অনুমতির কথা জানানো হয়নি। অথচ আমরা দেখছি আজকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীনেরা জনসভার আয়োজন করেছে। গত ১০ দিন ধরে ঢাকা শহরে মাইকিং করা হচ্ছে। কত কিলোমিটারের মধ্যে সভার মাইক লাগানো হয়েছে। রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঢাকা শহরের চারদিকে ব্যানার আর ফেস্টুন। কিন্তু আমরা তো এসব কিছুই চাইনা। কেবল একটি সভার অনুমতি চাচ্ছি। যা আমার সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক, নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে বিএনপি আজকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কেনো একটি দলকে রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন রেখে আমীর খসরু বলেন, আমরা খুলনাতে সার্কিট হাউস মাঠে ১০ মার্চ একটি সভার জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম তা দেয়া হয়নি। সেখানকার হাদিস পার্ক মাঠেও অনুমতি চেয়েছি কিন্তু এখনো কিছুই জানানো হয়নি। আগামী ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে জনসভার জন্য বিএনপি আবেদন করেছে বলে তিনি জানান।

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে কিছু বিষয়ে প্রত্যাশা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ৭ মার্চের জনসভা থেকে আমি আশা করি, দেশের মানুষের যে প্রত্যাশা তা পূরণকল্পে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি কথা বলবেন। এগুলো হলো, আমরা আশা করি উনি বলবেন- জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা উনি করছেন, উনি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন, মানবাধিকার যে লঙ্ঘিত হচ্ছে সেদিকে উনি মনোযোগি হবেন, দেশে আইনের শাসন ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে উনারা মনোযোগী হবেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি মনোযোগী হবেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে দেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ সংসদ ও সরকার গঠনের জন্য তার বক্তব্যে প্রতিশ্রুতি থাকবে বলে আমি আশা করবো।

আমীর খসরু বলেন, ৭ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ৭ মার্চের আজকের জনসভা। আমরা জনসভাকে স্বাগত জানাই। কারণ প্রত্যেক দল তাদের আর্দশ ও চিন্তা-চেতনা নিয়ে অনুষ্ঠান করবে। আর সেখানে কারো দ্বিমত থাকার কারণ নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে জনসভা করে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন এবং জনগণকে জনসভায় ডেকে শপথ গ্রহণ করাচ্ছেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৪২২/ঘ)