গণতন্ত্রশূন্যতার দুঃসময়ে কবি নজরুল প্রেরণা যোগায় : রিজভী

গণতন্ত্রশূন্যতার দুঃসময়ে কবি নজরুল প্রেরণা যোগায় : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনন্য কীর্তিগুলো আছে বলেই আজও আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই, সংগ্রাম করছি। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত হচ্ছে নির্বাচন। সেই নির্বাচন এখন দিনের বেলায় হয় না, সে নির্বাচন চলে গেছে রাতে। এই যে এত বড় একটা অন্যায় সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আজও আমরা কথা বলছি, সত্য বলছি নজরুল ইসলামের অনন্য কীর্তিগুলো আছে বলেই তার কালজয়ী, কালোত্তীর্ণ লেখাগুলো আছে বলেই আজও আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করছি।’

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি’র উদ্যোগে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যখন আমরা মিছিল করব কবি নজরুল ইসলামের জীবন আমাদেরকে প্রভাবিত করে। যখন সত্য উচ্চারণ করব তখন তার জীবন আমাদেরকে প্রভাবিত করে। গণতন্ত্রের কথা বললে যখন আমাদেরকে গ্রেফতার করা হয় তখন কাজী নজরুল ইসলাম আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন স্বেচ্ছায় নির্যাতন ভোগ করতে। নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি ঘটনার সাথে জড়িত তার জীবনের প্রতিটি ঘটনা আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে।’

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘গণতন্ত্রশূন্যতার এই যুগে, দুঃশাসনের এই যুগে প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ক্ষণে কাজী নজরুল ইসলাম আমাদেরকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছেন যে, দুঃসময়কে অতিক্রম করার জন্য, বেঁচে থাকার জন্য এবং সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য কাজী নজরুল ইসলাম সবসময় আমাদের পাশে আছেন, আমাদের হৃদয়ে আছেন, আমাদের অন্তরে আছেন। তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন বলেই এত নিপীড়ন-নির্যাতনের মধ্যেও আমরা এখনো সত্য উচ্চারণ করছি গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করছি।’

রিজভী বলেন, ‘কবি নজরুল মানবতার কবি, সাম্যের কবি। মানবতা এবং সাম্যের এত শাণিত উচ্চারণ সেই ঔপনিবেশিক যুগে তিনি করেছেন যা আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। যখন চারিদিকে দেখি বঞ্চনা শোষণ এবং জুলুমের ভয়াবহ স্টিমরোলার চলছে তখন কবি নজরুল ইসলামের গান, কবিতা সবকিছুই আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে, অনুপ্রাণিত করে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে বড় ধরনের প্রেরণা যোগায়।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন নির্বাচন কমিশন তার যে কার্যক্ষমতা সেই ক্ষমতাটা দিয়ে দিচ্ছে সরকারের হাতে। সেজন্য একজন নির্বাচন কমিশনার প্রতিবাদ করেছেন, নোট অফ ডিসেন্ট দিয়েছেন। আরপিওর মধ্যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য তাদের যে ক্ষমতা রয়েছে সেটা আলাদাভাবে আইন করে সরকারের হাতে ক্ষমতাটা দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এখনই তো পুরোপুরিভাবে যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যারা পরিচালনা করছেন, নির্বাচন কমিশন, তারা তো সরকারের বাইরে এমনিতে একধাপও যান না, তারপরও নিশ্চিত হতে পারছে না সরকার।’

এ প্রসঙ্গে রিজভী আরো বলেন, ‘সরকার তার কর্তৃত্ব অ্যাবসোলুট করার জন্য রাজনীতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়টি আইন করে তাদের হাতে রাখতে চাচ্ছে। অর্থাৎ একটা সর্বগ্রাসী কর্তৃত্বের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিচ্ছেন যেন গণতন্ত্রের জন্য কেউ আওয়াজ না তুলতে পারে, রাষ্ট্রের সমস্ত কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে- এটাই হল ব্যাপার।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই যে জুলুম-উৎপীড়ন, গণতন্ত্রহীনতা- এটার জন্য আজও নজরুল আমাদেরকে প্রেরণা যোগায় যার কারনে উচ্চারণ করি আমাদের সত্য কথাগুলো গণতন্ত্রের পক্ষে জুলুমের বিরুদ্ধে।’

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জাসাসের সভাপতি মামুন আহমেদ, সহ-সভাপতি শাহরিয়ার ইসলাম শায়লাসহ বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

এমজে/