বিদেশের মাটিতে নিঃস্ব ও প্রতারিত হয়ে শ্রমিকরা দেশে আসার পর সরকার সহানুভূতির পরিবর্তে কাল্পনিক অভিযোগে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণকে রাষ্ট্রীয় পাপ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিৃবতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আ স ম রব বলেন, বিদেশের মাটিতে নিপীড়ন, অবমাননা ও প্রতারণার শিকার হয়ে দেশের মাটিতে ফেরার পর অদ্ভূত অভিযোগ এনে তাদেরকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা সরকারের নিষ্ঠুর নির্মম আচরণ, যা রাষ্ট্রীয় পাপের নামান্তর। নিজ দেশের নাগরিকদের দুঃখ-দুর্দশায় পাশে না দাঁড়িয়ে তাদেরকে নতুন করে চরম দুঃখ-দুর্দশার দিকে ঠেলে দেয়া কোন বিবেক সম্পন্ন সরকারের কাজ হতে পারেনা।
তিনি বলেন, প্রতারণার শিকার ভিয়েতনাম ফেরত ৮১জন, কাতার ফেরত দুইজন এবং এর পূর্বে কুয়েত, বাহরাইন ও কাতার থেকে আসা ২১৯ জন অভিবাসীকে সরকার কারাগারে পাঠিয়েছে। এটাই হচ্ছে রেমিটেন্স অর্জনকারী শ্রমিকদের প্রতি সরকারের প্রতিদান। অথচ এই অভিবাসী শ্রমিকদের রেমিটেন্সে আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে, সরকারের রাজকীয় অপচয় ভোগবিলাস নিশ্চিত হচ্ছে। অথচ অভিবাসীগণ বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সময় তাদের প্রতি আমরা ন্যূনতম সম্মান না দেখিয়ে বরং ‘নবাবী’ আচরণের অপবাদ দিয়ে সংবর্ধিত করি, রাষ্ট্রদ্রোহী বলে কারাগারে পাঠাই। এগুলি আমাদের ক্ষমা অযোগ্য অপরাধ।
সরকারের বৈধ অনুমোদন নিয়েই শ্রমিকগণ বিদেশে গমন করে উল্রেখ করে রব বলেন, শ্রমিকদের বিদেশে যাওয়ার অনুমতি, ছাড়পত্র প্রদান, রিক্রুটিং এজেন্টসহ সরকারি কর্মকর্তারা যারা প্রতারণা চক্রে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে শ্রমিকদেরকে আজগুবি মামলায় গ্রেপ্তার সরকারের গণবিরোধী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। অসহায় শ্রমিকগণ দূতাবাসে অভিযোগ জানাতে যাওয়ার পর আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দূতাবাস দখলের অভিযোগ করেছেন।
এ ধরনের মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি রাষ্ট্রের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। গ্রেপ্তারকৃত অভিবাসীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি, অভিবাসী আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রবাসীদের ন্যায়সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।