যদি বিবেক থাকতো প্রতিদিন কান ধেরে উঠবস করতেন : রিজভী

যদি বিবেক থাকতো প্রতিদিন কান ধেরে উঠবস করতেন : রিজভী

এতো অত্যাচার, গুম খুন নারী নির্যাতন, নারীর সম্ভ্রমহানীর পর ও আওয়ামীগের নেতাদের মুখ থেকে কথা বের হয় কিভাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, আজকের প্রত্যেকটা ঘটনার সাথে সরকারের অঙ্গ সংগঠন জড়িত প্রতিদিন তাদের নাম আসছে। ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ আপনাদের টনক নড়ে না? আপনারা বলেন বিএনপির টপ টু বটম পদত্যাগ করা উচিত।আরে আপনাদের যদি বিবেক থাকতো আপনাদের যদি মানবতা থাকতো তাহলে আপনারা প্রতিদিন কান ধরে উঠবস করতেন,আপনাদের এই অনাচার কে প্রশ্রয় দেয়ার জন্য এই ঘৃণ্য নারী সম্ভ্রমহানি কারীদেরকে প্রশ্রয় দেয়ার জন্য।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে দেশব্যাপী অব্যাহতভাবে ধর্ষণের প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আজকে দেশে ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য চলছে। কেউ নিরাপদ চলাফেরা করতে পারবে না,কারো কোনো নিরাপত্তা থাকবে না মানুষ রাস্তা দিয়ে নিরাপদে হেঁটে যেতে পারবেনা বাজার করতে গেলে রাস্তা থেকে টাকা কেড়ে নেবে। মানুষের লাশ পড়ে থাকবে ফুটপাতে আর রাস্তায় এটাই হচ্ছে নৈরাজ্য। ফরাসি বিপ্লবের সময় বলা হয়েছিল রেনডম টেরর,ত্রাসের রাজত্ব। সেই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা বলেছেন আমরা করোনার চাইতেও শক্তিশালী।আজকের সংবাদপত্রের রিপোর্ট হচ্ছে বাংলাদেশের পৌনে চার লক্ষ লোক করোনায় আক্রান্ত। এত অহমিকা।তথ্যমন্ত্রী বলেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব মোকাবেলা করে ফেলেছেন।

গতকাল সাহিত্যে একজন নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কবি। প্রখ্যাত কবি তার একটি কবিতা পড়ছিলাম বাংলাদেশের মন্ত্রীদের কথার সাথে যেন মিলে যায়। তার কবিতার প্রথম লাইন এর অর্থ হচ্ছে কেউ টিকে থাকবে এমনকি গ্রীক বীর ও একিভিস নয়। যে গ্রীককে মানুষ মনে করত ঈশ্বরের কাছাকাছি। তাই আমি সরকারকে বলি আপনারাও টিকে থাকবেন না টিকে থাকার কোনো কারণ নেই। আপনাদের মন্ত্রীরা যারা আস্ফালন করছেন সেই আস্ফালন একটি বিয়োগান্ত পরিণতির দিকে চলে যেতে পারে। ক্ষমতা হারিয়ে পথে ঘাটে বসতে হতে পারে।

আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক সময়ে দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন,কাদের সাহেব বলেছেন বিএনপির টপ টু বটম পদত্যাগ করা উচিত, ওবায়দুল কাদের সাহেব আজকে রিফাতের কান্না,ফেনীর নুসরাতের কান্না,আজকে নারায়ণগঞ্জের ত্বকির কান্না আজকে সিরাজগঞ্জের রুপার কান্না,সিলেটের এমসি কলেজের নবদম্পতির গৃহবধূর কান্না,তার চাইতেও মর্মান্তিক ভয়ঙ্কর বেগমগঞ্জের একলাশপুরের নারীর কান্না, যে নারী তার লজ্জা নিবারণের জন্য হাতের সামনে কাঁথা চাদর যা সামনে পেয়েছে সেটাও এই সম্ভ্রমহানিকারীরা তাকে নিতে দেয়নি এই বিভৎসতা এটা বর্ণনার কোন ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না, এগুলোকে কি বলে অভিহিত করব।

রিজভী বলেন, সরকার এত শক্তিশালী? এই তাদের শক্তির নমুনা? তারা শক্তিশালী তাদের জন্যই যারাই দুষ্কর্ম করছে অনাচার তাদের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছেন এই সরকার। এরা যে পৃষ্ঠপোষক তাদের অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে ২০০৯ অথবা ১০ সালে নাটোরের বড়াইগ্রামের উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন বাবুকে যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতারা হত্যা করে লাশের উপর নাচানাচি করেছিল এত দিন অতিবাহিত হয়ে গেল সেই মামলার চার্জশিট দেয়া হয়নি কারণ ওই হত্যাকারীদেরকে বাঁচাতে চায় সরকার। কারন ওরা তার দলের লোক।

তিনি বলেন,'আজকে সরকার চারি দিক থেকে ব্যর্থ এই ব্যর্থতা ঢাকার জন্য তারা জনগণের দৃষ্টিকে একেক সময় একেক দিকে নিয়ে যায় আপনি পানি বলেন বিদ্যুৎ বলেন প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে নৈরাজ্য। কত ভয়ঙ্কর ঘটনা সমাজে ঘটছে মানুষের উপর এত উৎপীড়ন নিপীড়ন নির্যাতন হচ্ছে সেই নিপীড়ন-নির্যাতন ঢাকার জন্য একটার পর একটা ঘটনা।এসমস্ত প্রত্যেকটি ঘটনার সাথে সরকারি দলের লোকেরা জড়িত এগুলোতো বানিয়ে বলা না হওয়া থেকে বলা না।

রিজভী বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, এত অনাচার নির্যাতনের পরও আওয়ামী লীগের লীগের নেতাদের গলা থেকে কথা বের হয় কিভাবে?তারা লাজলজ্জার পোশাক নদীতে ফেলে দিয়েছে তারা নিজেরাই সমস্ত লাজ লজ্জা বিসর্জন দিয়েছেন বলেই আজকে এই অপরাধীরা এই দুষ্কৃতকারীরা এই সম্ভ্রমহানি কারীরা এই নির্যাতনকারীরা এই হত্যাকারীরা এই সন্ত্রাসীরা লালিত পালিত হয়েছে রাষ্ট্রের প্রশ্রয়ে।না হলে কেউ কি বলে একটা মারলে তোমরা দশটা মারো, আজকে যিনি রাষ্ট্রের প্রধান তিনিই তো বলেছিলেন তোমরা কি চুড়ি পড়ে থাকো একটা মারলে দশটা মারো। এই ধরনের কথা যখন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে বলেন দেশের সমস্ত দুষ্কৃতিকারী আওয়ামী লীগে যোগদান করবে।তাদের কারণেই আজকে জনপদের পর জনপদ মা-বোনের আত্মচিৎকারে আকাশ বাতাস একেবারে ভারী হয়ে গেছে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,মহিলা দলের নেত্রী শাম্মী আক্তার,নিলুফা ইয়াসমিন মনি,আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমজে/