জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল প্রশ্নে জাতি বিব্রত: গয়েশ্বর

জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল প্রশ্নে জাতি বিব্রত: গয়েশ্বর

মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এটি অযাচিত, অপ্রাসঙ্গিকভাবে জাতির সামনে এসেছে। তিনি আরও বলেন, ‘এতে জাতি বিব্রত। তাঁর বীর উত্তম খেতাব বাতিলের বিষয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের কিছু নেই। এটি ঐতিহাসিক দালিলিক সত্য।’

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর রায় এসব কথা বলেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের অবদান হিসেবে সর্বমোট ৬৮ জনকে বীর উত্তম খেতাব দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে জিয়াউর রহমান বাদে সবাই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। একমাত্র তিনিই বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থেকে যুদ্ধ করেছেন। সবচেয়ে বেশি বীর উত্তম খেতাবও পেয়েছেন তাঁর জেড ফোর্সের যোদ্ধারা।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর সম্মাননা দেবে। কারণ, জিয়াউর রহমান শেখ মুজিবের নেতৃত্বকে মেনে সবাইকে যুদ্ধে আহ্বান জানিয়েছিলেন।’

আল জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো বহু কিছু হজম করে ফেলেছে। এ প্রতিবেদন কেন হজম করতে পারছে না? আপনারা পারলে আল জাজিরার প্রতিবেদনটি যে মিথ্যা, সেটি প্রমাণ করুন। আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করে কোনো লাভ নেই। বাংলাদেশে বন্ধ থাকলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে তো আল জাজিরার সম্প্রচার চলমান থাকবে।’

এনডিপির চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহেরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান সাইফুদ্দীন মনি, বাংলাদেশ মুসলিম সমাজের চেয়ারম্যান ডা. মাসুদ হোসেন প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানকে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেওয়া হয়েছিল। গত মঙ্গলবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সভায় সেই খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি বলছে, এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচিও দিয়েছে দলটি।

তবে গত বুধবার গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘খবরটা অনেকেই হয়তো ঠিকমতো পরিবেশন করেন নাই। বঙ্গবন্ধুর চার হত্যাকারীর বিরুদ্ধে আদালতে রায় ঘোষিত হয়েছে। তাদের রাষ্ট্রীয় সনদ বা সম্মাননা সেটা বাতিল করা হয়েছে। আরো চারজনের নাম এসেছে দালিলিক প্রমাণসহ। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। এদের মধ্যে জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষী রয়েছেন। সেজন্য আমরা একটা কমিটি করে দিয়েছি, আগামী সভায় এ বিষয়ে কী কী দালিলিক প্রমাণ আছে সেটা দাখিল করার জন্য। এবং তাহলে তাদের সম্মাননা বাতিল করা হবে।’

এদিন মন্ত্রী আরো বলেন, ‘কী কী দালিলিক প্রমাণ আছে, মুখে বললে তো হবে না। দালিলিক প্রমাণ যদি থেকে থাকে সেগুলো আগামী সভায় উপস্থাপনের জন্য বলা হয়েছে।’