বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ

‘রাজপথ উত্তপ্ত হচ্ছে, অচিরেই সরকার পতনের আন্দোলন’ (ভিডিও)

‘রাজপথ উত্তপ্ত হচ্ছে, অচিরেই সরকার পতনের আন্দোলন’ (ভিডিও)

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ থেকে নেতাকর্মীদের নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে রাজপথ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। অচিরেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে। এ আন্দোলনে সবাইকে শামিল হতে হবে।

মঙ্গলবার বিকালে রাজশাহী মহানগরীর মাদ্রাসা ময়দান সংলগ্ন একটি কমিউনিটি সেন্টারের পাশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীর প্রতিটি মোড়ে মোড়ে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এদিন সকাল থেকে নগরীর আম চত্ত্বর, কাঠাখালী, সাহেব বাজার, ফায়ার সার্ভিস মোড়, ভোজ পাড়া মোড়, সদর হাসপাতাল মোড়, সিএমবি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তল্লাশি চালাতে দেখা গেছে। তবে শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসেন নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার বিকাল তিনটায় সমাবেশ শুরু হলেও দুপুরের পর নগরীর নাইস কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় লোকে লোকারন্য হয়ে যায়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি আরও বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে প্রস্তুত আছি। জীবনের শেষবিন্দু রক্ত দিয়ে হলেও গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে আমি আছি। সবাই প্রস্তুতি নিন।’

টুকু বলেন, দেশ এখন দুর্নীতিতে ভরে গেছে। ফরিদপুরের ছাত্রলীগ সভাপতিই দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। তাহলে রাঘববোয়ালরা কত টাকা পাচার করেছে তার হিসাব দেশের জনগণ নেবে।

তিনি বলেন, ‘পুলিশ এখন সরকারি দলের কর্মী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার আগে থেকেই দেশের নানা সমস্যার সমাধান হয়েছে রাজপথে। এবারও রাজপথেই ফয়সালা হবে।’

 

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ বলেন, রাজশাহীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার সব বন্ধ করে দেয়াতে মানুষ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও যেতে পারছে না। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আর এই সরকারকে সময় দেয়া যাবে না। আমাদের নেতা তারেক রহমান যেদিন বলবে সেইদিন সংসদ থেকে পদত্যাগ করে সরকার পতনের জন্য যা যা লাগে তাই নিয়ে যুদ্ধ শুরু করবো।

খুলনা সিটি করপোরেশনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ভোট ডাকাতির চিত্র তুলে ধরতে ৬ সিটিতে সমাবেশ করছে জনতার মেয়ররা। সমাবেশের অনুমতি দিলেও পথে পথে বাথা বাধা দিচ্ছে পুলিশ। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে পরিবহন, হোটেল মোটেলও। বিএনপি কারচুপির নির্বাচনে আর যাবেন না বলে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর শেখ হাসিনা সরকারের পতনও হবে সে বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।

এছাড়াও বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সামসুল হক প্রামাণিক, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা প্রমুখ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। সমাবেশে বিভাগের আট জেলার সভাপতি ও সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশ নেন।

সোমবার সকাল থেকে রাজশাহীর সঙ্গে দেশের সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও তারা বিভিন্ন যানবাহনে সমাবেশে আসেন। দুপুরের পর থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে তারা সমাবেশে যোগ দেন। 

সমাবেশকে ঘিরে রাজশাহীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সমাবেশস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল জলকামান, এপিসি যান এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি করে গাড়ি।