ভারতে পালানোর সময় আটক সেই যুবলীগ নেতা

ভারতে পালানোর সময় আটক সেই যুবলীগ নেতা

বগুড়া, ৩০ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক (এডি) সাজাহান কবিরকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার খলনায়ক যুবলীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর মোস্তাকিম রহমানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দিনাজপুরের হাকিমপুরের ডাঙ্গাপাড়ার সাতকুড়ি বাজার থেকে মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করে। মোস্তাকিম এই সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।

এর আগে সাজাহান কবিরকে কোপানোর ঘটনায় বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহকারি শাজেনুর রহমান বাদি হয়ে শাজাহানপুর থানায় ১৬ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। এই মামালায় মোস্তাকিমকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূইয়া জানান, ঘটনার পর থেকে হামলাকারীদের শনাক্তে কাজ শুরু করে পুলিশ। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ইন্টেলিজেন্স উইং এবং দিনাজপুর জেলা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের এডি সাজাহান কবিরের উপর হামলা মামলার প্রধান আসামী মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করা হয়। সে হাকিমপুর হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। পালিয়ে যাওয়ার আগ মূহুর্তে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আর একটু পর গেলেই সে ভারতে পালিয়ে যেত। এ ঘটনার সাথে জড়িত আরো ৩ জনকে গ্রেফতার এবং ১ জনকে আটক কর হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, এই মামলা গ্রেফতারকৃতরা হলো বগুড়া শহরের খান্দার বিলের পাড় এলাকার বাসিন্দা মৃত মহির উদ্দিনের পুত্র যুবলীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর মোস্তাকিম রহমান (৪০), সুত্রাপুরের রমজান আলীর পুত্র হাসান আলী (২৬), ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়ার আব্দুল কাদেরের পুত্র মোহাম্মদ জীবন (২১), ঠনঠনিয়া মধ্যপাড়ার আবু তালেব এর পুত্র রাসেল মিয়া (৩০)।

এছাড়া সন্দেহমূলক মিলু (২২) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। মোস্তাকিমকে দিনাজপুর থেকে গেফতার করা হলেও বাকিদের বগুড়া শহরের খান্দার ও ঠনঠনিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা সকলেই মোস্তাকিমের সাথে দির্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন এলাকায় অপকর্ম করে আসছিল।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক (এডি) সাজাহান কবির অফিস থেকে বের হয়ে রিক্সযোগে বগুড়া শহরের শাকপালা মোড়ে যাওয়ার সময় কৈগাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেল যোগে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। এসময় সাজাহান কবির সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচতে দৌড়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের একটি অফিস কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানেই দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। তাকে আহত অবস্থায় প্রথমে বগুড়ায় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে।

মেহেরপুরের বাসিন্দা বগুড়ার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের এডি সাজাহান কবির বগুড়ায় যোগ দিয়েই তার কার্যালয় থেকে দালালমুক্ত করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এতে করে দালালমুক্ত হয় পাসপোর্ট অফিস। পরে তিনি কার্যালয় চত্বরে একটি অভিযোগ বক্স রাখেন। সেখানে তিনি অভিযোগ ও সেবা পাওয়া, কোন কর্মকর্তার সেবা কেমন পেয়েছেন সে বিষয়েও লিখিতভাবে জানাতে বলেন। এসব কারণে পাসপোর্টের দালালরা তার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। বগুড়ার পাসপোর্ট অফিস ঘুষ, দুর্নীতি ও দালাল মুক্ত করার কারনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া কয়েকদিন আগে তার অফিসে গিয়ে গ্রেফতারকৃতরা আর্থিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করেছিল। সেই সুবিধা না দেয়ার কারণে তার সাথে বাকবিতন্ডাও হয়। এরপর তার উপর এ হামলা হয়েছে।

(জাস্ট নিউজ/একে/২১৪৮ঘ.)