‘রাজনৈতিক নেতাদের রিমান্ড নিয়ে হাইকোর্ট কথা বলে না’

‘রাজনৈতিক নেতাদের রিমান্ড নিয়ে হাইকোর্ট কথা বলে না’

দৃষ্টি খালি এক ইস্যু থেকে অন্য ইস্যুতে নিয়ে যাওয়া হয়, আমাদের পত্রপত্রিকাগুলো ওই লাইনে চলে গেছে। যেটা ইস্যু না, কোথাকার কোন পরীমণি তাকে নিয়ে সাংবাদিকরা ঝাঁপিয়ে পড়ছে; সেটাকেই বড় করে হেডলাইন করছে। অন্তত একবার আমরা জানলাম হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের কাছে জানতে চাইলো, নিয়মের ব্যতিক্রম করে কেন এতবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যখন আমাদেরকে নিয়মের ব্যতিক্রম করে রিমান্ডে নেওয়া হয়, রাজনৈতিক নেতাদের যখন রিমান্ডে অত্যাচার করা হয়; সেই সম্পর্কে এই হাইকোর্ট কোনও কথা বলে না। কারণ তাদের স্বাধীনতা নেই বলার।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুরুল হক হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক মন্ত্রী ও জাপার একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

বিএনপি মহাসচিব প্রয়াত কাজী জাফরের স্মৃতিচারণ করে বলেন, কাজী জাফর একটি ইতিহাস। কলেজ জীবনে তার বক্তব্য শুনে আমরা ঘরে থাকতে পারিনি। অধিকার আন্দোলনে কাজী জাফরের ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৬৬, ৬৯ ও ৭১ আর ২০২১ সাল এক নয়। নতুন বিশ্বকে আমাদের বুঝতে হবে। শাসকগোষ্ঠী, ধরণ পাল্টিয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দলের পক্ষে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়। সকলের মাঝে আজ হতাশা বিরাজ করছে, কেন? আ'লীগ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছে। এরশাদকেও নয় বছর শাসন করার পর বিদায় নিতে হয়েছে। এই বর্তমান বাকশালি শাসকগোষ্ঠীকেও বিদায় নিতে হবে। তবে একটু অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। করোনায় থাবায় চাকরি হারাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। সরকারের এই দিকে কোনও দৃষ্টি নেই। দেশ আজ মহাসংকটে। এই সংকট কোনও ব্যক্তির নয়, গোটা জাতির। দেশ আজ অস্তিত্ব বিলীন হতে চলছে। এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এদেশ ক্ষয় হতে থাকবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সীমান্ত ক্রস করলেই গুলি করে মারা হচ্ছে। ভারতের কাছে তারা বিচার চাইতেই ভয় পায়। ৪ বছরেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারলো না। কারণ নতজানু পররাষ্ট্রনীতি।

তিনি আরও বলেন, কেউ এসে আমাদের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে না। গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আমরা আজও মুক্ত করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা। কারণ, ক্ষমতায় আছে দানবীয় সরকার। আমরা চেষ্টা করেছিলাম ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যজোটের সমন্বয়ে দেশে পরিবর্তন আনার। কিন্তু রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে করে আমাদের সে চেষ্টা সরকার ভুন্ঠিত করে দেয়। তাই বলে কি আমরা বসে থাকবো?

তিনি বলেন, গণতন্ত্র, মানুষ ও দেশ বাঁচাতে দেশের তরুণ সমাজ উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এদেশের মানুষ কখনও পরাজিত হয় না। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন- হতাশ হই না, জয় আসবেই।

স্মরণসভায় এএসএম শামীমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এনপিপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, নওয়াব আলী আব্বাস, অ্যাডভোকেট মুজিবর রহমান, মাওলানা রুহুল আমিন প্রমুখ।