সিলেট বিভাগীয় মহাসমাবেশে ড. মোশাররফ

‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না’

‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না’

সিলেট, ১০ এপ্রিল (জাস্ট নিউজ) : কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। নিয়মতান্ত্রিক ও সুশৃংখল আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারের পতন ঘটানো হবে।

মঙ্গলবার বিকালে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে বিএনপির সিলেট বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলীয় চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় নগরী সিলেটে ‘শান্তিপূর্ণ’ এ সমাবেশ আয়োজন করে বিএনপি।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশসমুহের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় এসে তাদের সেই কলংক থেকে দেশকে রক্ষা করেছিল। আর এখন আওয়ামী লীগ বিশ্ব স্বীকৃত স্বৈরাচারী সরকারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জাজনক।

মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিঁয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। তখন আওয়ামী লীগ ছিল নিরাপদ আশ্রয়ে। আওয়ামী লীগ বাকশাল করেছিল শহীদ জিয়া গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করেছেন। আওয়ামী লীগ আবারো বাকশালের দিকে হাটছে আর গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন চলছে।

 

সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইনের সভাপতিত্বে, মহানগর সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ও জেলা সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের যৌথ পরিচালনায় নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে জনতার ঢল নামে। সিলেট জেলা ও মহানগর, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন। দুপুর ২টায় শুরু হওয়া সমাবেশ ক্রমেই মহাসমুদ্রে পরিণত হয়। রেজিস্ট্রারি মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গোটা শহর যেন সমাবেশের নগরীতে পরিণত হয়।

সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন- সিলেটের মাটি প্রয়াত সফল অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত। এই মাটিতে জন্ম নিয়েছেন আমার মায়ার প্রিয় নেতা সন্তানতুল্য এম ইলিয়াস আলী। আজ ইলিয়াস আলী সরকারের গুম নামক কারাগারে আটক রয়েছে। এছাড়াও সিলেটের কয়েকজন ছাত্রনেতা সহ শতশত নেতাকর্মীদের গুম করেছে এই সরকার। এম সাইফুর রহমান ও এম ইলিয়াস আলীর সিলেটবাসীর লোকজন বিএনপিকে ভালবাসে, সিলেট বিএনপির ঘাঁটি। আজ দেশবাসী তার প্রমাণ পেয়েছে। সিলেট থেকেই অবৈধ সরকার পতনের ডাক দিতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে সর্বশেষ সফর সিলেটেই করেছিলেন। তাই জাতীয় রাজনীতিতে সিলেটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বছর খানেক আগে ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছেন। এ অনুযায়ী বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠী ছাড়া অন্য কোনো কোটা থাকবে না। এবং তা ভিশন-২০৩০ তে পরিস্কারভাবে উল্লেখ করাও আছে।’

সরকারিসহ সব ধরনের চাকরিতে কোটা সংস্কারের চলমান শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে খুবই যৌক্তিক আন্দোলন উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, কোটা সংস্কারের চলমান আন্দোলন খুবই যৌক্তিক। কিন্তু, সরকার স্বৈরাচারী আচরণের মাধ্যমে এ আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তবে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে কখনো স্বৈরাচারী আচরণের মাধ্যমে দাবিয়ে রাখা যায় না।

সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তার মায়ের অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেন নি। ফলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বিএনপির মোকাবেলা করতে আওয়ামী লীগকে র‌্যাব-পুলিশকে ব্যারাকে রেখে রাজপথে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পুলিশ-র‌্যাবকে ব্যারাকে রেখে রাজপথে লড়াইয়ে আসুন। তাহলেই বোঝা যাবে কার শক্তি বেশি, জনগণ কার সঙ্গে আছে?

দলের স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না সরকার। গণতন্ত্রের সমাবেশে অনুমতি প্রয়োজন নেই। সংবিধান এই অধিকার একটা নাগরিককে দিয়েছে। কিন্তু আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে সে অধিকার টুকু পাচ্ছি না।

আওয়ামী লীগের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ১৭ বছর আগে এই দলটি দুর্নীতির সার্টিফিকেট পেয়েছিল। এবার তারা স্বৈরচারী হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। জনগণের ওপর তাদের কোনো ভরসা নেই। তাদের ভরসা অন্য জায়গায়। কিছু পুলিশের ওপর আর নির্বাহী বিভাগের ওপর।

‘আজ তারা সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, শেয়ার বাজার লুট করেছে। দেশের সমস্ত সম্পদ লুট করে বিদেশ পাচারের ব্যবস্থা করেছে।’ জনগণের উদ্দেশ্য করে আমীর খসরু বলেন, আপনারা প্রস্তুত থাকুন, এসবের জবাব দিতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক, উপদেষ্টা সাবেক চীফ হুইপ ফজলুল হক আসপিয়া, উপদেষ্টা আলহাজ্ব এম.এ হক, উপদেষ্টা ড. মো: ইনামুল হক চৌধুরী, উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনী, কেন্দ্রীয় ও সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: সাখাওয়াত হাসান জীবন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক শরাফত আলী সপু, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হবিগঞ্জ পৌর মেয়র জিকে গৌছ, কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম, কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মামুন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট জেলা সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, কেন্দ্রীয় সদস্য সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি সাবেক এমপি এম. নাসের রহমান, সাবেক এমপি আলহাজ্ব শফী আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য ডা: শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, কেন্দ্রীয় সদস্য চিত্রনায়ক হেলাল খান।

মহানগর ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাসুদ আহমদের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সূচীত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এডভোকেট নুরুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য এডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নি, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক এমপি আব্দুল কাহির চৌধুরী, মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, জেলা সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল গাফফার, সুনামগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল, মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল ইসলাম বাদরু, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সিলেট মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, শাহজামাল নুরুল হুদা, মহানগর সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির শাহীন, সিসিক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মহানগর সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত চৌধুরী সাদেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম সিদ্দিকী, সৈয়দ মঈনুদ্দিন সোহেল, কাউন্সিলার দিনার খান হাসু, হুমায়ুন আহমদ মাসুক, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলার সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, জেলা সাংগঠনিক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর সাংগঠনিক মাহবুব চৌধুরী, জেলা সাংগঠনিক আবুল কাশেম, শামীম আহমদ, জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরাম সিলেটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান সাবু, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক সালেহ আহমদ খসরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর আহ্বায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন লস্কর, যুবদল নেতা নজিবুর রহমান নজিব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী (ভিপি মাহবুব), মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাঈদ আহমদ, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী কাউন্সিলার সালেহা কবির শেপী, জেলা জাসাস সভাপতি জসিম উদ্দিন, মহানগর জাসাস সাধারণ সম্পাদক তাজ উদ্দিন মাসুম, মহানগর মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী মিনারা বেগম, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সুরমান আলী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক ইউনুছ মিয়া প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/প্রতিনিধি/একে/১৯৫০ঘ.)