ছাত্রদের জোর করে নেয়া হচ্ছে আ' লীগের সম্মেলনে

ছাত্রদের  জোর করে নেয়া হচ্ছে আ' লীগের সম্মেলনে

রাজনৈতিক কোনো প্রোগ্রাম হলেই মেসের মানুষদের জোর করে নেওয়ার পুরনো সেই রীতিতে আবারও ফিরেছে ফরিদপুরে। দীর্ঘ ৩ বছর যাবৎ এই রীতি বন্ধ ছিল।

তবে এবার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কয়েক নেতা লোক দেখানোর জন্য মেস থেকে জোর করে প্রোগ্রামে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ছাত্র-ছাত্রীদের। এছাড়া কেউ যেতে না চাইলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) ফরিদপুর জেলা সম্মেলন হওয়ায় সকাল ৭ টা থেকে প্রায় ছাত্র মেস থেকে শিক্ষার্থীদের জোড় করে মিছিলে নেওয়া হয় বলে জানা যায়।

এ চিত্র দেখা যায়, শহরের চর কমলাপুর, পূর্ব খাবাসপুর, বায়তুল আমান, আলীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, সকাল ৭ টার দিকে একটানা একাধিকবার বাসার কলিংবেল বাজানো, দরজা ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে কয়েকজন যুবক। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে ঢুকেই তারা বলতে থাকে ‘সবাই ওঠো, অমুক ভাইয়ের মিছিলে যেতে হবে। ’ কেউ কেউ সিগারেট টানতে টানতে রুমের ভেতর ঢুকে যায়। আমরা যেতে না চাইলে তারা বলেন, তারা দুর্ব্যবহার করে। এছাড়া তারা মাস্টার্সে পড়ুয়াদের, কোচিং শিক্ষকদের, চাকুরীজীবীদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে। ফলে আমরা আতঙ্কেও থাকি। এর থেকে পরিত্রাণ চাই আমরা।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মোবাইলফোনে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহামেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে, এ ব্যাপারে জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক খান শাহ সুলতান রাহাত বলেন, এটা সম্পন্ন ভিত্তিহীন কথাবার্তা। এমনটা প্রশ্নই আসে না। আমরা কাউকে জোর করে বাসা কিংবা মেস থেকে সম্মেলনে আনছি না। তবে ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে ভালোবেসে অনেক ছাত্র-ছাত্রী নিজ ইচ্ছায় সম্মেলনে এসেছে। এমনকি ছাত্রছাত্রীদের মা-বাবাও সম্মেলন দেখতে এসেছেন।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন, সেখানে মেস থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের কেন ডেকে আনবে? এটাতো প্রশ্নই আসে না। এটাতো ছাত্রলীগ-যুবলীগের সম্মেলন না।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুরে সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপির আবির্ভাবকালে প্রতিনিয়ত মেসের শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকতেন। কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হলেই এক ধরনের মানসিক নির্যাতনে পড়তে হতো শিক্ষার্থীদের। ২০১৮ সালের শেষদিকে ফরিদপুরের রাজনীতিতে অভিযানের পর থেকেই মেস থেকে শিক্ষার্থী নেওয়ার রীতি বন্ধ হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আবারও সেই রীতি দেখা দিয়েছে বলে একাধিক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।