আসন ভাগের নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না: বিএনপি

আসন ভাগের নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না: বিএনপি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসন ভাগাভাগির পরিকল্পনা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা। তাঁরা বলছেন, আসন ভাগের নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না এবং যারা তাতে অংশ নেবে, তাদেরও প্রতিহত করবে বিএনপি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে ‘দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে’ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলা হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে, কুমিল্লায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদের গাড়িতে এবং ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদ জানানো হয় এ সমাবেশ থেকে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের অধীন কোনো নির্বাচন হবে না। আসন ভাগাভাগির নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। আসন ভাগের নির্বাচনে যারা যাবে, সরকার ও তাদের বিরুদ্ধে একযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হলে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়া হবে না। এ কথার পরই খন্দকার মোশাররফের বাড়িতে হামলা করা হলো, রেদোয়ানের গাড়িতে হামলা হলো। এতে বোঝা যায়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কেউ প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনে না। তিনি জানান, মোশাররফের বাড়িতে যারা হামলা করেছিল, তারা উত্তম-মধ্যম খেয়ে ফেরত এসেছে। প্রতিরোধ শুরু হয়ে গেছে। এখন থেকে প্রত্যাঘাত করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অভিযোগ করেন, ‘প্রতিবেশী ও বাংলাদেশ সরকারের কতিপয় লোক ফেরি করে বেড়াচ্ছে—কাকে কয়টা আসন দিয়ে নির্বাচনে নেবে। এ অধিকার কে দিয়েছে?’ আসন বণ্টনকারী এই দালালদের ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা সরকারের ফাঁদে পা দেবে, তাদের প্রতিহত করতে হবে।

খন্দকার মোশাররফের বাড়িতে হামলাকে পরিকল্পিত মহড়া উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘হামলা হলে পাল্টা হামলা, আঘাত এলে পাল্টা আঘাত করতে হবে। এ দায়িত্ব পালনে যারা বাধা দেবে, তাদের মোকাবিলা করব। আর ছাড় দেওয়ার সময় নেই। মুখ বুজে পিঠে লাঠির বাড়ি খাওয়ার সময় নেই।’

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর মতো অবস্থা দেখতে চান না জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘নিরাপদে মানসম্মান নিয়ে প্রস্থান করুন। আওয়ামী লীগ যদি শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা না নেয়, তাহলে তাদের পরিণতি ভয়াবহ হবে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই প্রতিবাদ সভা অন্যায় ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খন্দকার মোশাররফের বাড়িতে হামলা করেছে দুষ্কৃতকারীরা। আগে দুষ্কৃতকারীদের জায়গা ছিল জেলে। এখন তাদের জায়গা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনে।

বিএনপির এ বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। সমাবেশ ঘিরে পুলিশেরও সতর্ক উপস্থিতি ছিল।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলমের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ।