সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানেই তাদের বৈধতা দেওয়া: বিএনপি

সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানেই তাদের বৈধতা দেওয়া: বিএনপি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এটা আমরা বহু আগে থেকেই জানি, যে কারণে আমরা আগেই বলে দিয়েছি যে আমরা কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না, পরিষ্কার করে বলেছি। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানেই হচ্ছে, তাদের আরও বৈধতা দেওয়া।’

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

‘১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা’ শিরোনামে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বিএনপিপন্থী অংশ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষাব্যবস্থাসহ সবকিছু যদি আমরা রক্ষা করতে চাই তাহলে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

পঁচাত্তরের ১৬ জুন শুধু সাংবাদিক বা সংবাদ জগতের জন্য কালো দিন নয়; সমগ্র জাতির জন্য একটা কালো দিন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ দিন সব সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করে দিয়ে শুধু চারটি চালু রাখা হয়েছিল এবং তা সরকারি তত্ত্বাবধানে চলবে এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় আমাদের লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠা করার। রাষ্ট্রের চরিত্রকে তখন থেকেই নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল যে এটা আওয়ামী লীগের একদলীয় রাষ্ট্র। সেদিন যাঁরা প্রতিবাদ করেছেন তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা গত এক যুগ ধরে দেখছি, ধীরে ধীরে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে যখন বাদ দেওয়া হয়, তখন থেকেই আমরা এই চিন্তা করেছি।’

বিএনপির মূল লক্ষ্য দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংবাদমাধ্যম ও রাষ্ট্রের স্বাধীনতাকে আমি ভিন্ন করে দেখি না। এটি একটি অপরটির পরিপূরক। গণতন্ত্র না পেলে আমরা স্বাধীনতা পেতে পারি না। আমাদের মূল লক্ষ্য এখন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। যাঁরা বাকশাল করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিলেন, তাঁদের কাছ থেকে আমরা গণতন্ত্র পেতে পারি না। আওয়ামী লীগের বডি কেমিস্ট্রিই প্রমাণ করে তাদের সবকিছু জোর করে আদায় নেওয়ার প্রবণতা।’

আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তফাত প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা গণতন্ত্র হরণ করেছে, মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করেছে। বিএনপি সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মাধ্যমে। আজকে যাঁরা ব্যবসায়ী আছেন, তাঁরা সংবাদপত্রকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁদের কাছ থেকে তো আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার ব্যাপারটা পাব না।’ তিনি বলেন, ‘আজকে অনেকেই বলেছেন সেখানে ব্যক্তি সাংবাদিকদের ভূমিকা অবশ্যই থাকবে। সেটা কতটুকু সম্ভব আমি তা–ও জানি না। সেই লক্ষ্যে আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সব পেশা ও শ্রেণির মানুষকে আমাদের জাগিয়ে তুলতে হবে। যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তার চূড়ান্ত রূপ দিতে হবে।’

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সা‌বেক সভাপ‌তি শওকত মাহমুদ, সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাংবা‌দিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপ‌তি কাদের গণি চৌধুরী, সহসভাপতি বাসিত জামান, সহসভাপতি রাশেদুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের যুগ্ম সম্পাদক লাবিন রহমান, বিএফইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনরে সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম প্রমুখ।