ওবায়দুল কাদের সড়কব্যবস্থাকে নৈরাজ্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন: ফখরুল

ওবায়দুল কাদের সড়কব্যবস্থাকে নৈরাজ্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন: ফখরুল

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গোটা সড়কব্যবস্থাকে নৈরাজ্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘প্রতিদিন শত শত মানুষ সড়ক দুর্ঘটনার প্রাণ হারাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার ১১ জন ছাত্র মাইক্রোবাসে করে যাচ্ছিল, ট্রেন এসে তাদের সবাইকে হত্যা করেছে। এ রকম অসংখ্য নজির প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছি।’

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সারা দেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

মেগা দুর্নীতি ও চুরির কারণে লোডশেডিং হচ্ছে—এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে প্রয়োজনের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আজকে লোডশেডিং কেন? এর কারণ হচ্ছে দুর্নীতি, চুরি ও মেগা চুরি। যে চুক্তি করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও তাদের টাকা দিতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও ১০টি প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সমুদ্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য একটা ফান্ড তৈরি করেছিল। সেখান থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নিয়ে গিয়ে এখন গ্যাস কেনার জন্য দিচ্ছে। এটাকে আরেকটা বাটপারি, ডাকাতি বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। তিনি বলেন, একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নাম করে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে, অন্যদিকে জ্বালানি হিসেবে গ্যাস আমদানি করছে। আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীরা এসব আমদানি করছেন।

আওয়ামী লীগের চুরি ও ডাকাতির হিসাব অসংখ্য দাবি করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, যেখানে যাবেন সেখানেই চুরি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অবকাঠামো তৈরির আগেই শিক্ষার্থী ভর্তির কাজ শুরু হয়েছে। চাঁদপুরে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে জমি কেনার নামে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরা টাকা লুটপাট করতে চেয়েছে। এই চিত্র সর্বক্ষেত্রেই। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি—সবকিছুর সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত। সবকিছু তারা এখানে ধ্বংস করে ফেলেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জোরগলায় বলেছেন, কোনো বাধা দেওয়া হবে না। সভা করেন। বিরোধীর দলকে গ্রেপ্তার হয়রানি করা হবে না। অথচ ঢাকা উত্তরের বিএনপি নেতা দুলুকে চ্যাংদোলা করে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। দক্ষিণে বেশ কয়েকজন নেতাকে একইভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, তাঁরা আশা করেছিলেন, গণতান্ত্রিক দেশ পাবেন।অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে। কিন্তু সবকিছুকে এই আওয়ামী লীগ তাদের চুরি, ডাকাতি ও লোভের কারণে ধ্বংস করে দিয়েছে। কর্তৃত্ববাদী শাসন গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা রসাতলে চলে গেছে।

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, এর থেকে দেশকে টেনে তুলতে হবে। ভয়াবহ দানব সরকারের পতনের জন্য এক দফা এক দাবি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। একসঙ্গে দড়ি ধরে টান দিলে শেখ হাসিনার পতন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল সালামের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহসহ দলের কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।