‘আয়নাঘর’ নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত চায় বিএনপি

‘আয়নাঘর’ নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত চায় বিএনপি

জাতিসংঘের প্রতি অনলাইন নিউজ পোর্টাল নেত্র নিউজের তথ্যচিত্র ‘আয়নাঘর’ নিয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে বিভিন্ন সময়ে বিএনপির অনেক নেতা–কর্মীকে অপহরণ ও গুম করেছে, সেটা এই তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে রোগমুক্তি ও আশু সুস্থতা কামনা এবং দেশব্যাপী চলমান আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর (উত্তর–দক্ষিণ) বিএনপি।

কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নেত্র নিউজে বাংলাদেশ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা পরিচালিত নির্যাতন সেল আয়নাঘরে রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের নির্যাতনের যে ভয়ংকর চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বিএনপি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’

বিএনপির উল্লেখসংখ্যক নেতা–কর্মী জোর করে অপহরণ ও গুমের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, সিলেটের সংসদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলমসহ প্রায় ৬০০ নেতা–কর্মী গুম হয়েছেন। যাঁদের অবস্থান সম্পর্কে সরকার কখনোই সদুত্তর দিতে পারেনি। উপরন্তু কয়েকজনকে ‘আয়নাঘর’ থেকে বের করে ভয় দেখিয়ে জোর করে বলিয়েছেন, তাঁরা নিজেরাই বিভিন্ন পারিবারিক কারণে লুকিয়েছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে ‘নির্যাতন সেল’ সম্পর্কে প্রচারিত তথ্যে বিএনপির দাবি প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অপহরণ, গুম, খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনারের কাছে এই জঘন্যতম বর্বরোচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে নিন্দা জানানো হয়েছে। তারাও অবিলম্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

বক্তব্যে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আসতে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার করতে হবে। এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সঙ্গে সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
দোয়া মাহফিলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে ক্ষমা চান দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা। সে কারণে তাঁর এই জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে ক্ষমা চাইছি।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।