ঐক্যের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে: মির্জা আলমগীর

ঐক্যের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে: মির্জা  আলমগীর

ঢাকা, ৩ মে (জাস্ট নিউজ) : সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে’ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ) এই সভার আয়োজন করে।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। এরপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। একইসাথে বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়াকেও অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা আলমগীর বলেন, সরকার মুখে বলছে মুক্ত গণমাধ্যম। অথচ ভিন্ন ধরনের সেন্সরশিপ আরোপ করছে। পত্রিকায় কোন নিউজ যাবে আর কোন নিউজ যাবে না তা সরকারের লোকজন নির্ধারণ করে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, জাতির সাথে জঘন্য প্রতারণা ও ডাবল স্ট্যান্ডার্ড করা হচ্ছে। সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু বাস্তবে কাজের মধ্যে ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদী। ভেতরে এক আর চেহারা আরেক। মুখে বলে ভালো করছে। আসলে গত দশ বছরে ভীতির সমাজ তৈরি করেছে। যে সমাজে কথা বলতে ভয়। লিখতে ভয়। এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আমাদেরকে শেষ করতে হবে।

মির্জা আলমগীর বলেন, একটা খবরের জন্য আমি এক পত্রিকার লোকদের জিজ্ঞেস করলাম এটা কোথায় কিভাবে পেলে? তারা বললো কিছু করার নেই আমাদের দেয়া হয়েছে। আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। এই হল আমাদের মুক্ত গণমাধ্যম। বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে যারা গণতন্ত্রের পক্ষে আছেন তাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। একটি বিষয়কে সামনে নিয়ে কাজ করতে হবে। সেটা হল গণতন্ত্রকে মুক্ত করা। আমাদের স্পষ্ট কথা পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে নির্বাচনের আগে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের রক্ষা কবচ হলো মুক্ত গণমাধ্যম। এটা মুক্ত না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না। পাকিস্তান আমল থেকে সাংবাদিক ভাইদেরকে সংগ্রাম করতে হয়েছে। কিন্তু যে বিষয়টা নিয়ে আমাদের স্বাধীনতা। সেই অবস্থা আজ নেই। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছিলাম যে আমরা ভিন্ন চিন্তা করতে পারব। কিন্তু এখানে লিখলে গুম হতে হয়। দেশ ছাড়তে হয়েছে সাংবাদিকদেরকে। আসলে দেশে ফ্যাসিবাদ যখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তখন সর্বত্র ভয় তৈরি হয়।

‘কাউকে নির্বাচন না করলে তো আর জেলে দেব বলতে পারব না’- গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, এমন একটা মেরুদণ্ড বিহীন নির্বাচন কমিশন তৈরী করেছে। যারা কোনো নিয়ম মানেনা। খুলনার ক্যান্ডিডেট বাধ্য হয়ে প্রচারণা থেকে সরে এসেছে। আমরা প্রতিনিধিকে পাঠিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বলেছি। যখন ফোনে বলি তারা বলে সবই ঠিক আছে। কিন্তু যেই এসপি হুইপকে মেরেছিল। এটা সবার জানা। আমরা প্রথমদিনই বলেছি গাজীপুরের এসপিকে সরাতে হবে। কারণ সে চিহ্নিত আওয়ামী লীগার। সে প্রথম দিনই জামায়াতের ৪৫ জন নেতাকে গ্রেফতার করেছে।

এখানে কিসের নির্বাচন? এভাবে তো হবে না। কিন্তু আমরা বলতে চাই জনকে সরাবেন? গুম করবেন করতে পারেন। তবে এই ধরনের নির্বাচন এবার মানুষ আর মেনে নেবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন দেশের মানুষ আর হতে দেবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই আওয়ামী লীগ ১/১১’র প্রতিনিধিত্ব করে চলছে। তারা আপনাকে জেলে নিলো। কতো কিছু করল। তাদের তো কিছু করলেন না। বরং তাদের সব কিছুকে ঘোষণা দিয়ে বৈধ্য ঘোষণা করেছেন। সম্পূর্ণ মিথ্যা অপরাধে খালেদা জিয়াকে জেলে আটক রাখা হয়েছে। লুট করে করে খালি করে ফেলেছে ব্যাংকগুলো। সব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী বলেছেন- ব্যাংকিং খাত নাকি এখনো ততোটা খারাপ হয়নি। তাহলে কি বাংলাদেশ ব্যাংক তুলে নিয়ে গেলে খারাপ হয়েছে বলবেন?

বিএফইউজে’র সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএফইউজের মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৫২১ঘ.)