বাঞ্ছারামপুরে সংঘর্ষ: বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

বাঞ্ছারামপুরে সংঘর্ষ: বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ছাত্রদল নেতা নয়নের মরদেহ এখনো ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়ি চর-শিবপুরে পৌঁছেনি। পরিবার ও স্বজনদের কান্না থামছে না। হত্যার বিচার চান তারা।

এদিকে শনিবার বিকেলের ঘটনায় এসআই আফজল হোসেন খান শনিবার দিবাগত রাত ১২ টা ৫ মিনিটে বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ১৭ জনকে এজাহারনামীয় এবং ১০০/১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এরমধ্যে মামলার প্রধান আসামি উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং বিএনপি কর্মী সাইদুরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহারে পুলিশের ওপর হামলা, পোশাক টেনেহিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা এবং অস্ত্র নিয়ে টানাহেঁচড়ার অভিযোগ করা হয়। এজাহারে বলা হয়, বিএনপি'র মিছিলের পেছন থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। এই অবস্থায় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় থানার ওসি, ওসি-তদন্ত ,এক এসআই এবং ২ কনস্টেবল আহত হয়।

নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, শনিবার বিকেলে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয় ছাত্রদলকর্মী নয়ন মিয়া (২২)। পরে রাত ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় সে। ওইদিন উপজেলা সদরের মোল্লা বাড়ির সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয় সে।

নয়ন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চরশিবপুর এলাকার রহমত উল্লাহর ছেলে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় পুলিশের ৫ সদস্য আহত হন।

আগামী ২৬শে নভেম্বর কুমিল্লায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলা সদর এলাকায় প্রচারপত্র বিলি করে। প্রচারপত্র বিতরণ শেষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহের সাবেক ভিপি সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে উপজেলা সদরে মোল্লাবাড়ি থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিলটি উপজেলা সদরের বাজার, বাঞ্ছারামপুর থানা ও উপজেলা পরিষদ এলাকা অতিক্রম শেষে পুনরায় মোল্লা বাড়ির মসজিদের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। সেখানে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশ জড়ো হয়ে সায়েদুজ্জামান কামালকে আটক করতে যায়। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি থেকে এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া শুরু হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে। এসময় নয়ন নামে এক কর্মী পেটে গুলিবিব্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।