সংসদকে একদলীয় ক্লাবে পরিণত করেছে সরকার: বিএনপি মহাসচিব

সংসদকে একদলীয় ক্লাবে পরিণত করেছে সরকার: বিএনপি মহাসচিব

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতান্ত্রিক যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান সরকার ধ্বংস করেছে। এখন যে সংসদ তারা তৈরি করেছে এটা কোনো জাতীয় সংসদ না। এটাকে একটা একদলীয় ক্লাবে পরিণত করেছে। 'ইটস এ ক্লাব অব আওয়ামী লীগ।'

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে 'রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা'র ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, গণতন্ত্রের গেটওয়ে হচ্ছে নির্বাচন ব্যবস্থা। সেই নির্বাচনী ব্যবস্থাটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন মানুষ বিরক্ত হয়ে ভোটই দিতে যায় না। ভোট কারচুপির জন্য যতকিছু কারসাজি করা দরকার সরকার করেছে। কখনো ১৫৪ জনকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ঘোষণা করে দেয়া, কখনো আগের রাতে ভোট নিয়ে নেওয়া। এই কাঠামোটাকে তারা নষ্ট করেছে।

সারাদেশে আন্দোলনের ঢেউ শুরু হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা জিনিসের উত্থান-পতন আছে, সামনে আগানো, পেছনে যাওয়া। সেই ঢেউয়ের মতো। যে ঢেউ শুরু হয়েছে উত্তাল তরঙ্গের মতো, সমুদ্রের মতো এরা ভেসে যাবে। কারণ, এদের সাথে জনগণ নাই, জনগণ থাকবে না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হতাশ হবেন না। অনেকের কথায় হতাশার একটু ছাপ খুঁজে পাই। কেনো হতাশ হবেন? আমরা তো সফল হচ্ছি, প্রতিটা পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছি। তার মতো হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে গেছেন। তাদের মুখে এতটুকু হতাশার ছাপ দেখিনি। কারণ এই লড়াইটা শুধু বিএনপির লড়াই নয়, এই লড়াইটা দেশের লড়াই। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার শুধু বিএনপির জন্য নয়, সমগ্র মানুষের জন্য, জাতির জন্য।

তিনি বলেন, আমরা একটা অসম লড়াইয়ের মধ্যে আছি। আমাদের প্রতিপক্ষ যারা তারা প্রবল প্রতাপশালী, ক্ষমতাশালী। তাদের হাতে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র, তাদের হাতে বন্দুক, তাদের হাতে পিস্তল-গ্রেনেড। অবলীলাক্রমে তারা সেগুলো মারে, উল্টো বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা দেয়।

পুরো বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, হাইকোর্ট জামিন দেয়, ৬ সপ্তাহের জামিন দিচ্ছে। নিম্ন আদালতে গেলে সেই জামিন বাতিল করে দিয়ে কারাগারে পাঠায়। চিন্তা করা যায় না। নিম্ন আদালতে কি হয় তা সবাই জানে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।

এ সময়ে তিনি দেশের জনগণের সমস্ত চিন্তা-ভাবনা, ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে অপমান করে সপ্তম শ্রেণীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর নতুন পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর নিন্দা জানান এবং ওইসব বই প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাম হাফিজ কেনেডী, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনিসুর রহমান ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ বক্তব্য রাখেন।