ঢাকা, ১৪ মে (জাস্ট নিউজ) : আগামীকাল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার জামিন শুনানিতে খালেদা জিয়া জামিন পেলেও তাকে রাজনৈতিকভাবে আবারো কারাগারে রাখা হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, রাজনৈতিকভাবেই আমাদের নেত্রীকে মুক্তি করতে হবে। আর রাজনৈতিকভাবে মুক্তি করতে হলে আন্দোলন- সংগ্রামের বিকল্প নাই। তবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা যাবেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশনেত্রী মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি আসাদুজ্জামান নেছার। অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ছাত্রদলের সহসভাপতি আলমগীর হাসান সোহান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রকিবুল ইসলাম বকুল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামীকাল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বেগম জিয়ার জামিন শুনানির আদেশ আছে। আমরা বিশ্বাস করি যে, বেগম জিয়াকে আপিল বিভাগের আর আটকে রাখা সম্ভব হবে না। সুতরাং আগামীকাল আপিল বিভাগের রায়ে আমাদের নেত্রী জামিন পাবেন। কিন্তু সরকারের যে নীল-নকশা, খালেদা জিয়া জামিন পেলেও তাকে সরকার মুক্ত হতে দিতে চায় না। সুতরাং তাকে মুক্তি দিবে না বলে আমাদের একটা শঙ্কা!
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার পরও তাকে মুক্তি না দেওয়ার জন্য সরকার নানা অযুহাত সৃষ্টি করবে। তাই আদালতের উপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা যাবে না। কারণ এই সাজাটা কোনো আইনের কাঠামো বা আইনের কোনো নিয়মের মধ্য হয়নি। কারণ যে অভিযোগে সাজা হয়েছে, তার সঙ্গে বেগম জিয়ার কোনো সম্পৃক্তা নেই। শাস্তি হয় কিভাবে?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, বিচারবিভাগ যদি স্বাধীন হতো এবং আইন যদি প্রয়োগ হতো তাহলে বেগম জিয়ার শাস্তি হয় না। অতত্রব খালেদার জিয়ার সাজা রাজনৈতিক। আর এখন পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে। আর কাল যদি জামিন হয় তাহলেও রাজনৈতিকভাবেই তাকে কারাগারে রাখা হবে। তাই সামনে মুক্তির যদি প্রশ্ন উঠে, তাহলে শুধু আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। এটা রাজনৈতিক। তাই রাজনৈতিকভাবেই আমাদের নেত্রীকে মুক্তি করতে হবে। আর রাজনৈতিকভাবে মুক্তি করতে হলে আন্দোলন- সংগ্রামের বিকল্প নাই।
আন্দোলন, সংগ্রাম, গণঅভ্যুত্থান ও গণজাগরণ কোনো নোটিশ দিয়ে হবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যেমন করে হঠাৎ করে হয়েছে। যেহেতু এটা তাদের যৌক্তিক দাবি। আজকেও গণতন্ত্র পুন:রুদ্ধার জনগণের কাছে যৌক্তিক দাবি। বেগম জিয়ার মুক্তি ও ভোটাধিকার জনগণের যৌক্তির দাবি। এই যৌক্তিক দাবিতে জনগণ যেদিন জাগবে। সেই জাগরণ কোনো সময়, তারিখ ও নোটিশ দিয়ে হবে না।
বিএনপির প্রার্থীর আপিলের মুখে ২৬ জুন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এবার গাজীপুরে যে জনগণ জোয়ার উঠেছিল। সেই জনজোয়ার থামবে না। এই জনজোয়ার আরো তীব্রতর হবে। আগামীকাল খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির এজেন্টদের ও ভোটাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। যার ফলে খুলনা নগরী ভয়ের নগরীতে পরিণত হয়েছে। জনগণ ভোট দিতে পারলে আগামীকাল ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৬৩১ঘ.)