কেরানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, নিপুন রায়সহ আহত ৫০

কেরানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, নিপুন রায়সহ আহত ৫০

কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় ঢাকা জেলা বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা–কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে জিনজিরা বাস রোডে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দুই পক্ষের অন্তত ৫০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তাৎক্ষণিকভাবে আহত অন্য নেতা–কর্মীদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে নিপুণ রায়কে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ও সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে জিনজিরা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বেলা পৌনে ১১টার দিকে যুবদলের একটি মিছিল জিনজিরা ছাটগাঁও এলাকা থেকে সমাবেশস্থলের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এলে দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের উত্তেজিত নেতা–কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। এর মধ্যে বিএনপির নেতা–কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ম ই মামুন অভিযোগ করে বলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়ের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগের ২০ থেকে ২২ জন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।

তবে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশাক বলেন, ‘জিনজিরা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছিলাম। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা আমাদের নেতা–কর্মীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান ও ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে নিপুণ রায়সহ আমাদের ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। মামলা–হামলা দিয়ে আমাদের আন্দোলন দমিয়ে রাখতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে জনগণ এর জবাব দেবে।’

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপির অতি উৎসাহী কিছু কর্মী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করেন। এর আগে সংঘর্ষে ও ইটের আঘাতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে বেলা সোয়া ১১টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে সাড়ে ১১টার দিকে পূর্বনির্ধারিত স্থানেই বিএনপি সমাবেশ শুরু করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ কেরানীগঞ্জের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের দলের নেতা–কর্মীর ওপর হামলা করেছে। এতে জেলা সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়সহ বেশ কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। মামলা–হামলা দিয়ে আমাদের আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সারা দেশেই আওয়ামী লীগ তাদের পেটোবাহিনী দিয়ে আমাদের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল–হাজতে পাঠানো হচ্ছে। এভাবে চলতে দেওয়া যাবে যাবে না। এদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’