তফসিলে একতরফা নির্বাচনের খায়েশ

তফসিলে একতরফা নির্বাচনের খায়েশ

সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনের জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে লাগাতার বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদলসমূহ। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো যেনো আসন্ন নির্বাচন একতরফা, ভোট কারচুপির এবং প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য জোর দাবি উঠেছে দেশের অভ্যন্তরে এবং একই ইস্যুতে চাপ অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী। কিন্তু সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ না করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আবারও ক্ষমতায় যাবার খায়েশ পূরণ করার স্বার্থে দলীয় তল্পিবাহকের মতো বুধবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

চলমান রাজনৈতিক সংকট এবং অচলাবস্থার মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সিইসির ভাষণ সম্প্রচার করা হয়।

সিইসির একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সারাদিনই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেছে বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা। তারা শেখ হাসিনার অধীনে যেকোনো নির্বাচন আয়োজনকে প্রত্যাখান করার ঘোষণা দিয়েছে। একইসঙ্গে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে।

নির্বাচনকালীন সরকার কী হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতা এখনো হয়নি। বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীন নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হরতাল, অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। সংঘাতময় এ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেন সিইসি।

একতরফা এবং বিতর্কিত তফসিল ঘোষণা দেওয়ার আগে বিকাল পাঁচটায় নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনাররা। সেখানে নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত করা হয়।

রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতিতে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্র তিন দলকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর দেওয়া চিঠি বিএনপি ও জাতীয় পার্টি পেয়েছে। বুধবার আওয়ামী লীগও চিঠি পেয়েছে।