অধিকার জলাঞ্জলি দিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক কেন: মির্জা আলমগীর

অধিকার জলাঞ্জলি দিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক কেন: মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ২৬ মে (জাস্ট নিউজ) : ভারতের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলে জনগণ তা মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার রাজধানীর পূর্বানী হোটেলে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি আয়োজিত ইফতারে প্রধানমন্ত্রীর চলমান ভারত সফরের সমালোচনা করে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় মির্জা আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শান্তিনিকেতনে গেছেন। আমাদের অনেকেরই প্রিয় জায়গা সেটি। সেখানে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করেছেন। ভালো কথা। কিন্তু আমাদের অধিকারের কথা বলা যাবে না কেন? পত্রিকায় দেখলাম প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমস্যার কথা বলে আজকের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে চান না। কেন এটা হবে? নিজেদের অধিকারের কথা বললে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক কেন নষ্ট হবে? এ সম্পর্কের জন্য কি আমরা পানি সমস্যা ভুলে যাবো?

তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে তিস্তার পানির সুরাহা হওয়ার কথা শুনছি। পানির অভাবে অনেকের জীবন-জীবিকা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। আমরাও তাদের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক চাই। কিন্তু পারস্পরিক স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নয়। নিজেদের অধিকার জলাঞ্জলি দিয়ে সুসম্পর্ক জনগণ মেনে নিবে না।

সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে এখন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে সরকার। সরকারি হিসাব মতো গত প্রায় এক সপ্তাহে ৫০ জনের অধিক লোককে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই মাদক নির্মূল হোক। কিন্তু মানুষ হত্যা করে মাদক দমন করা যায় না। এর জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জনগণই মাদক নির্মূল করবে।

এসময় তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আগে আপনাদের ঘরকেই সামলান। মাদকের সম্রাট তো আপনাদের ঘরেই আছে। তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেননি এখনো। উল্টো বলছেন তার অপরাধ প্রমাণিত হয়নি! অথচ সারা দেশ জানে আওয়ামী লীগের একজন এমপি মাদকের সম্রাট।

দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসময় হয়তো কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একাকী ইফতার করছেন। এটি আমাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত করে। এসময় ইফতার মাহফিলে মন থেকে আসার ইচ্ছা হয় না। তবু রাজনীতির কারণে আসতে হয়!

সরকার ইচ্ছে করে দেশনেত্রীকে কারাবন্দি করে রেখেছে দাবি করে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে। সাধারণত এসব মামলায় সঙ্গে সঙ্গে মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন কৌশলে বেগম খালেদা জিয়াকে এ সরকার মুক্তি দিচ্ছে না। নানা কৌশলে তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে সরকার। আসন্ন নির্বাচন থেকে বেগম জিয়াকে দূরে রাখার জন্য এ কৌশল অবলম্বন করেছে তারা।

ইফতার মাহফিলে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, নিতাই রায় চৌধুরী, উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মিরপুর থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দুলু প্রমুখ।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মিয়া গোলাম পারোয়ার, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিঙ্কন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া এলডিপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান খান, মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বিজেপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদ, লেবার পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, (অপরাংশ) মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি, এনডিপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, খেলাফত মজলিশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শেখ গোলাম আজগর, ন্যাপ-ভাসানীর সভাপতি আজহারুল ইসলাম, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/একে/২১৩৩ঘ.)