‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে বিনাবিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে: মির্জা আলমগীর

‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে বিনাবিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে: মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ২৮ মে (জাস্ট নিউজ) : বিনাবিচারে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে কাদের মারা হচ্ছে আমরা জানি না। আমরা চাই মাদক নির্মূল হোক।

সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

মির্জা আলমগীর বলেন, আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মূল্যবোধের কোনো স্থান নেই। দেশে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। সমাজের সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন করতে হবে।

বাংলাদেশ আজ ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে অবস্থান করছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ এর চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। সবার আগে গণমাধ্যমের ওপর আঘাত করা হয়েছে। একটি স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশ সম্ভব নয়। সরকার সেই গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে নিজেদের স্বার্থে।

মির্জা আলমগীর বলেন, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে একটি নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে। বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে সে নির্বাচন হতে হবে। এ সময় সরকার রাজনৈতিকভাবে দেওলিয়া হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা আলমগীর।

ইফতার মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা শুনেছি- কয়েকদিন আগে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যারা সত্য কথাগুলো বলেছিলেন, নিউজ করতে গিয়েছিলেন, সরকারি দলের হস্তক্ষেপে তাদের অনেককে চাকরিচ্যুতও করা হয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার বিভিন্ন কৌশলে কারাগারে আটকে রেখেছে অভিযোগ করে মির্জা আলমগীর বলেন, সরকার এজন্য এটা করছে যে তারা রাজনৈতিক দিক থেকে একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেছে। জনগণের কাছে যেতে ভয় পায়, জনগণের সামনে আসতে ভয় পায়। যে কারণে আজকে তারা (সরকার) বিরোধীদলীয় নেত্রীকে এবং বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গুম করে, খুন করে দেশে একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। যেটাকে ফ্যাসিবাদ বলা ছাড়া অন্য কিছু বলার উপায় নেই।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা বলতে চাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। আসুন আজকে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার মধ্য দিয়ে সমাজের সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্যে আমরা সকলে একযোগে আন্দোলন করি, এটাই হোক আমাদের প্রত্যাশা।

ইফতার মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও মির্জা আব্বাস, দলের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, শওকত মাহমুদ, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন ও বরকত উল্লাহ বুলু, জামায়াতে ইসলামীর নেতা মিয়া গোলাম পারোয়ার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজের একাংশের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২১১৭ঘ.)