গাজীপুর, ৫ জুন (জাস্ট নিউজ) : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমিকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লাসহ ১৬ জনের নামে এ জিডি করা হয়েছে। রবিবার কাপসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান এই ডায়েরিটি করেন।
অবশ্য রিমির পক্ষের আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা মামলা করেছেন কৃষক লীগের এক নেতা। আর ক্ষমতাসীন দলের দুই পক্ষ মুখোমুখি থাকা অবস্থায় বিপাকে পুলিশ।
গত দেড় মাস ধরে এলাকায় আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগ নেতাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি চলছে। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে কাপাসিয়ায় সভা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ১৪৪ ধারাও জারি হয়েছে।
এর মধ্যে রিমিকে হত্যার হুমকির জিডিতে অভিযোগ করা হয়, শুক্রবার বিকালে কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা আলম সরকার কাপাসিয়ার দক্ষিণগাঁওয়ে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। তিনি সংসদ সদস্য রিমিকে হত্যা এবং কাপাসিয়া থেকে এমপি রিমিকে বিতাড়িত করার হুমকি দেন।
ঈদের পর এমপি রিমি ও তার সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের লোকজনকে সময় সুযোগমতো শায়েস্তা করার হুঁশিয়ারি দেয়ার হয় বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
জিডিতে কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম সরকার ছাড়াও, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আইন উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুল হক চৌধুরী আইয়ুব, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য কনকসহ অজ্ঞাতনামা আরো আট থেকে ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
অপরদিকে কৃষক লীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম বাবলুও রবিবার রাতে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৭১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় পাল্টা মামলা করেন।
কাপাসিয়ায় রিমির সঙ্গে কৃষক লীগ নেতা মোতাহারের বিরোধ রয়েছে। দুই পক্ষ সেখানে পাল্টাপাল্টি নানা কর্মসূচি পালন করছে।
গত ১৯ এপ্রিল কড়িহাতায় কৃষক লীগ ‘সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রচার’ সভার পাশে পাল্টা কর্মসূচি দেয় ছাত্রলীগ। পরে স্থানীয় প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে।
৩১ মে বারিষাবতে কৃষক লীগের উন্নয়নমূলক প্রচার সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। পরে সেখানে হামলা চালিয়ে মঞ্চ, তিনটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে এবং ইফতার ছিনিয়ে নিয়ে তছনছ করা হয়।
রিমি জাতীয় নেতা তাজউদ্দিন আহমদের মেয়ে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তাজউদ্দিন পুত্র সোহেল তাজ। তবে তিনি অভিমানে মন্ত্রিসভার পর ও সংসদ সদস্যপদও ছেড়ে দেন। পরে উপ নির্বাচনে রিমিকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। আর দশম সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন।
জানতে চাইলে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক গণমাধ্যমকে বলেন, সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমির পক্ষে করা জিডি এবং অপর পক্ষের দায়ের করা মামলা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও কৃষক লীগ নেতা আলম আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তারা কেউ ফোন ধরেননি।
(জাস্ট নিউজ/একে/২৩৪৭ঘ.)