ভোট সুষ্ঠু হলে বিএনপির প্রার্থী বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন: মির্জা আলমগীর

ভোট সুষ্ঠু হলে বিএনপির প্রার্থী বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন: মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ২৪ জুন (জাস্ট নিউজ) : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গাজীপুরে যদি ন্যূনতম নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তাহলে বিএনপির প্রার্থী বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন। তিনি আরো যোগ করেন, যদি আগের রাতে ব্যালট বাক্স পূরণ করা না হয়, তাহলে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হবেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গাজীপুরে জনগণের প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে। বিএনপির নেতারা যখন গণসংযোগ করতে গিয়েছেন, তখন স্থানীয় লোকজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।

রবিবার বিকালে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

গাজীপুরের ভোটারদের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির চাওয়া, ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের অধিকার পূরণ করেন।

গাজীপুরের জনগণের উদ্দেশে মির্জা আলমগীর বলেন, ভোটাররা তাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রদান করবেন। ভোটাররা সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে যাবেন, নিজেদের ভোটাধিকার প্রদান করবেন। তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্য গণতন্ত্রকে সমাহিত করা। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ব্যবসায় পরিণত করেছে সরকার। এ কারণে গাজীপুর নির্বাচনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হবেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, গাজীপুর নির্বাচন নিরপেক্ষ না হলে দলটি এর পরের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না, সে বিষয়ে পরে জানাবে। এ বিষয়ে আজ এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, তাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখার জন্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপি স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় অংশ নিচ্ছে আন্দোলনের অংশ হিসেবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এ কারণে নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নিচ্ছে। এসব নির্বাচন স্বচ্ছ না হলে বিএনপি সামনের স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে অংশ নেবে কি না এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা বলার সময় এখনো আসেনি।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ অযোগ্য। কারণ যারা একটি সিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারছে না, তারা কীভাবে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবে? নির্বাচন কমিশনের কাছে যা-ই অভিযোগ করা হয়, তারা এসব শুনেও শোনে না। বিএনপির প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের কাছে অনেক অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কিছুতেই কোনো কাজ হচ্ছে না।

গাজীপুরের পুলিশ সুপারের বিষয়ে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা আলমগীর বলেন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার সবার কাছে পরিচিত ও পুরোপুরি ‘আওয়ামী লীগের’। তার অতীত কর্মকাণ্ড সবার জানা আছে। বিএনপি আগেও পুলিশ সুপার হারুনকে এখান থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছিল, এখনো তাকে না সরালে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। তিনি বলেন, গাজীপুরের এসপিকে সরানোর জন্য ইসির কাছে অনুরোধ করলে তারা বলেন, তিনি (পুলিশ সুপার) তো অনেক দিন সেখানে আছেন তাই তিনি অনেক কিছু জানেন। তিনি থাকলে নির্বাচন ভালো হবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটে তার উল্টো।

মির্জা আলমগীর বলেন, গাজীপুরের নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। ভোটাররা যেন সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারেন। নির্বাচন কমিশন সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। না হলে নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি বিএনপির সুপারিশ উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ সরকারের পছন্দমতো লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। ইসির প্রধান আপাদমস্তক দলীয় লোক।

গাজীপুরে দলীয় এজেন্ট দিতে পারবেন কি না, জানতে চাইলে মির্জা আলমগীর বলেন, সব কেন্দ্রের জন্য বিএনপির এজেন্ট প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু এখন তারা সেখানে থাকতে পারবেন কি না, সেটি দেখার বিষয়। কারণ খুলনাতেও প্রায় ৫০টির বেশি কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এবার গাজীপুরে কী করবে, সেটা দেখার অপেক্ষায় আছে দেশের জনগণ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার নিজেদের দলের লোক দিয়ে নির্বাচন করছে না। মূলত নির্বাচন পরিচালনা করছে পুলিশ, এসবি ও ডিবির লোকজন। সরকারের পক্ষে নির্বাচন প্রচার পরিচালনার কাজও করছে পুলিশ। এর প্রমাণ হলো পুলিশের গাড়িতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারের দৃশ্য।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, জমির উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২০৫০ঘ.)