খুলনার পর গাজীপুরেও কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের মহোৎসব

খুলনার পর গাজীপুরেও কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের মহোৎসব

গাজীপুর, ২৬ জুন (জাস্ট নিউজ) : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের পর গাজীপুরেও কেন্দ্র দখল, বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়া ও জাল ভোটের মহোৎসবের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় নগরীর ৪২৫টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

এদিকে এজেন্ট বের করে দেয়া ও জাল ভোটের অভিযোগ তুলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছিলেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার৷ কিন্তু বিএনপির দাবি না মেনেই শেষ হয় গাজীপুর সিটি নির্বাচন। নানা অভিযোগসহ ৯টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে।

বিএনপির প্রার্থী অভিযোগ করেন, তাদের এজেন্টদের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে৷ ভোটের আগের রাতেও তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে বিএনপি৷ আর গত কয়েকদিনে দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ৷ সোমবার রাতে বিএনপি নেতা মেজর (অব.) মিজানুর রহমান মিজানকে তার গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তার পরিবারের দাবি– মেজর (অব.) মিজানকে বিনা ওয়ারেন্টে বাসার দরজা ভেঙ্গে নিয়ে যায় পুলিশ৷

গাজীপুরের কোনাবাড়িতে এমইএইচ আরিফ কলেজ কেন্দ্র নৌকা মার্কার ব্যাজ পরিহিত লোকজন এসে একটি বুথ থেকে জোরপূর্বক ব্যালট পেপার ছিনিয়ে অন্য আরেকটি কক্ষে নিয়ে নৌকা মার্কায় সিল দেবার অভিযোগ উঠেছে। তখন গোলযোগের কারণে ভোট গ্রহণ প্রায় এক ঘণ্টা স্থগিত ছিল বলে জানিয়েছেন বিবিসির সংবাদদাতা।

সে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদুল আমিন জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল দেবার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ব্যালট পেপার কেউ নেয়নি। ভোটারদের লাইন দীর্ঘ হওয়ায় কিছুটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। গোলযোগের আশংকায় কিছুক্ষণ ভোট গ্রহণ স্থগিত রেখে পরে আবার চালু করা হয়।

সে কেন্দ্রের পাশে আরেকটি প্রাইমারি স্কুলে স্থাপিত ভোট কেন্দ্রেও জোর করে নৌকা মার্কায় ব্যালট পেপার সিল দেবার অভিযোগ উঠেছে। কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টরা এ অভিযোগ করেছেন। সেখানকার প্রিসাইডিং অফিসারও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মদিনাতুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ২০-২২ যুবক তিনটি বুথে ঢুকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে জোর করে নৌকা মার্কায় সিল দেবার অভিযোগ রয়েছে। বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন এ ঘটনা তাদের সামনেই ঘটেছে। এ কাজের সাথে যারা জড়িত তারা আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক বলে জানা গেছে। সে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার শেখ এখলাসুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

কাদির কল্লোল জানিয়েছেন, শহিদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত একটি কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে গোলযোগ হয়েছে। তবে সে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বিবিসি সংবাদদাতা কাদির কল্লোলের বর্ণনায় প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীদের সক্রিয় দেখা গেছে। একটি কেন্দ্রের সামনে নৌকা মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে শ্লোগান দেয়া হয় যেটি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।

সকালে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ভোট দিতে এসে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশংকা প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন গতরাতে তার কর্মী, সমর্থক এবং নির্বাচনী এজেন্টদের ধরপাকড় করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনী এজেন্টদের কেন্দ্র না যাবার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলেও তার অভিযোগ।

এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মণ্ডল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, পাঁচ থেকে ছয়টি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। তিনি বলেন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে।

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২৩২০ঘ.)