গাজীপুরে ভোটের নামে তামাশা হয়েছে : মির্জা আলমগীর

গাজীপুরে ভোটের নামে তামাশা হয়েছে : মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ২৭ জুন (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) মিলে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তামাশা করেছে।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘গাজীপুরে নির্বাচনের নামে তামাশা করেছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। নতুন নতুন রূপে ভোট ডাকাতির ফর্মুলা আবিষ্কার করছে, যাতে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে পারে। আমরা গাজীপুরের ভোটের ফলাফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এবং নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বেসরকারি ফল ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মাথায় আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। এ সিটির ৪২৫টির মধ্যে ৪১৬টি কেন্দ্রের ফল নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল আজ সকালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে চার লাখ ১০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন এক লাখ ৯৭ হাজার ৬১১ ভোট। ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি’ হওয়ায় নয়টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।

এ নির্বাচনের কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই বিএনপি জাল ভোট, কারচুপি আর অনিয়মের অভিযোগ আনলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার দাবি করা হয়েছে।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য একের পর এক ভোট ডাকাতি করছে। খুলনার নতুন রূপে ভোট ডাকাতির ফর্মুলা এবার আরো ভালোভাবে গাজীপুরে প্রয়োগ করে নিজেদের পক্ষে রায় নিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে আওয়ামী লীগ আজীবন ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে।’

‘আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। বারবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে রায় ছিনিয়ে নিচ্ছে। আওয়ামী লীগের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। গাজীপুরের নির্বাচনের মাধ্যমে তারা আবার সেটি প্রমাণ করেছে।’

এ অবস্থার মধ্যেও আসছে সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী তিন সিটি নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আর সেটি আমাদের চলমান আন্দোলনের অংশ। যার মাধ্যমে জনগণের সামনে বর্তমান গণবিরোধী সরকারের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। কারণ এটি আমাদের আন্দোলনের অংশ। এর মাধ্যমে জনগণের সামনে সরকার ও ইসির চরিত্র বের হয়ে আসবে।’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা ইসিকে বলব আপনাদের সঠিক সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করুন। একই সঙ্গে জনগণকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি, বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ এবং পুনর্গঠন চায়। কারণ, তারা তাদের দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তাই নতুন করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।’

‘জনগণের রায় পক্ষে নিতে সরকার প্রচারমাধ্যমকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে’ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এমনকি অনেক গণমাধ্যমের মালিককে ডেকে নিয়ে ধমক দেওয়া হয়েছে, যাতে নির্বাচনের সংবাদ প্রচার না করে। কারণ আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি যেন জনগণ জানতে না পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১২১০ঘ.)