মন্ত্রীর নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছেঁড়ার অভিযোগ ও গণধোলাই

মন্ত্রীর নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছেঁড়ার অভিযোগ ও গণধোলাই

মনিরুল ইসলাম ফরাজী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: ভোলা, ৬ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : ভোলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং জনগনের ভোট প্রত্যাশা ও দোয়া কামনা করে লাগানো প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংযুক্ত পোস্টার ও ব্যানার বাণীজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নির্দেশে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভোলা সদর ১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন।

শুক্রবার দুপুরে এ অভিযোগ তোলেন হেমায়েত উদ্দিন। অভিযোগ করে তিনি জাস্টনিউজকে বলেন, আমি ভোলা সদর ১ আসন থেকে আগামী ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এলাকায় আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। যার কারণে বাণীজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ক্ষুব্ধ হয়ে আমার নেতা-কর্মী ও সমর্থকদেরকে হুমকি দিচ্ছে এবং হয়রানি করাচ্ছে। কয়েকদিন আগে আমার পোস্টার লাগানোর সময় মন্ত্রীর নির্দেশে কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরে আমি বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়ে তাদেরকে মুক্ত করি।

তিনি বলেন, শুক্রবার আমার এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংযুক্ত ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার সময় স্থানীয় জনতা একজনকে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দিয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রাজাপুরে আমার সমর্থকদের ধরার জন্য পুলিশের অসংখ্য গাড়ি টহল দিচ্ছে। সাথে আওয়ামী লীগের কিছু হাইব্রীড নেতা রয়েছে।

হেমায়েত উদ্দিন শুক্রবার সকালে তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ সকালে ভোলা সদর আনন্দ বাজারে আমার পোস্টার গুলি উপরের নির্দেশে ছিঁড়ে ফেলা হয়। আমি এ হীন কাজের তীব্র নিন্দা জানাই।’ দেশরত্ন শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা ব্যানার নামাতে এসে মন্ত্রীর মদদ পুষ্ট জলদস্যু হাইব্রিড মিজান খাঁর ফুফাতো ভাই দুলাল রাড়ী জনতার হাতে গণধোলাই খায়।’

উল্লেখ্য, হেমায়েত উদ্দিন ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজারের ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার পিতার নাম (মৃত) ডা: মমতাজ উদ্দিন। ৯ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ৪র্থ। তার বাবা ভোলার রাজাপুর ইউনিয়েন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৪ সালে হেমায়েত উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-ধর্ম সম্পাদক পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহ-সম্পাদক নির্বাতি হন। ২০১৬ ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের মেম্বার নির্বাচিত হন তিনি।

ছাত্র জীবণে বার বার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন জনপ্রিয় এই নেতা। তখন তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দেয়া হয়। ১৯৯৬ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রায় ২ মাস কারাভোগ করার পর তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসলে তিনি ছাড়া পান। ওই সময় তিনি অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন। তখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার ব্যয়বার বহন করেন।

হেমায়েত উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ও ৯৮ সালে একই বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাশ করেন। ১৯৮৮ সালে ভোলা জিলা স্কুল থেকে (মানবিক বিভাগ) প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন তিনি। এর পর ১৯৯০ সালে ভোলা সরকারী কলেজ থেকে এইসএসসি (মানবিক বিভাগ) প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ছাত্র জীবণে আন্দোলন সংগ্রামে সবসময়ই তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। বিপদ-আপদে সবসময় এই নেতা থাকতেন ভোলাবাসীর পাশে। যার কারণে ভোলার মানুষের কাছে তিনি এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৩৫৫ঘ.)