‘মামলার বাদি ছাড়া কোনো সাক্ষী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বলেনি’

‘মামলার বাদি ছাড়া কোনো সাক্ষী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বলেনি’

ঢাকা, ১৫ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালাস চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বলেছেন, মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষী হারুন অর রশিদ ছাড়া আর কোনো সাক্ষী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বলেনি। এ মামলার প্রথম অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নুর আহম্মদ যে অনুসন্ধান রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছিলেন সেখানে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু আসেনি। সেই অনুসন্ধান প্রতিবেদনের বিষয় বস্তুর ভিতরে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু ছিলনা। তিনি (মামলার প্রথম সাক্ষী) অনুসন্ধান রিপোর্টের বাইরে সাক্ষ্য দিয়েছেন। রেজাক খান আরো বলেন, এ মামলায় ব্যাংকের হিসাব খোলাসহ কোনো ডকুমেন্টে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাক্ষর নেই।

রবিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষীর জবানবন্দী ও আংশি জেরা পড়ার সময় আদালতে এসব কথা আবদুর রেজাক খান বলেন। এরপর সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়েছে।

রবিবার বেলা ২টায় বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি শুরু করা হয়। শুরুতেই বেগম খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী এ জে মোহাম্মাদ আলী আদালতে বলেন, এ আপিলের পোপার বুক অসম্পূর্ণ। এ অবস্থায় মামলার শুনানি করা যায় না। তখন আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের দুষ্টি আকর্ষক করেন। জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, তারা যে আটটি পয়েন্টের কথা বলেছে তা পেপার বুকে আছে। তখন আদালত সেগুলো দেখাতে বলেন। আদালত বলেন তারা বলছে নেই। কিন্তু দুদকের আইনজীবী পেপারবুকের সূচিতে তা দেখাতে পারলেও মুল কাগজপত্রে দেখাতে পারেনি। এরপর আদালত আইনজীবী খুরশীদ আলম খানকে পয়েন্টগুলো দেখানোর আদেশ দিয়ে বলেন। আগামীকাল সোমবার জানাবেন কোন কোন পেজে এগুলো আছে। সোমবার এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে।

এরপর আদালত মামলার পেপারবুক থেকে প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়তে বললে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ছাড়া কিভাবে আমরা শুরু করব।

এসময় আদালত বলেন, এখানে এগুলো দরকার নেই। শুরু করেন। কোর্ট যেটা বলে সেটা ফলো করার চেষ্টা করেন। অবশ্যই আপনারা ডকুমেন্ট পাবেন।

এরপর এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, অসম্পূর্ণ পেপার বুক নিয়ে আমরা কি করে শুনানি করতে পারি।

এসময় আদালত শরফুদ্দিন আহমেদের আইনজীবী আহসান উল্লার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি কি প্রস্তুত। প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়বেন।

জবাবে আইনজীবী আহসান উল্লা বলেন, এটা পলিটিকাল মামলা। তারা আগে শুরু করুক।
জবাবে আদালত বলেন, কোনো মামলা পলিটিক্যাল মামলা নয়।

এর পর এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের ফোর্স করা হয়েছে। এরপর আবদুর রেজাক খান মামলার প্রথম সাক্ষী সাক্ষ্য পড়া শুরু করেন।

রবিবার দুপুর ২টায় বেগম খালেদা জিয়ার আপিল শুনানিতে অংশ নিতে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত হন। বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন- মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানা উল্লাহ মিয়া, আমিনুল ইসলাম, নওশাদ জমির, রাগীব রউফ চৌধুরী, মো: ফারুক হোসেন, আনিছুর রহমান খান, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, আইয়ুব আলী আশ্রাফী প্রমুখ। আর রাষ্ট্রপক্ষে পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এরআগে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিলের শুনানি শুরু হয়। ওইদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন আদালত।

বৃহস্পতিবার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী একটি সম্পূরক পেপারবুক সরবরাহের জন্য আদালতে একটি আবেদন দাখিল করেন। ওই আবেদনের বিষয়ে তিনি আদালতকে বলেন, পেপারবুকে (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অনেক তথ্যই নেই। গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি ও কাগজ পেপারবুকে সরবরাহ করা হয়নি বলে আমরা মনে করছি। আমরা মামলা সংশ্লিষ্ট ৮ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নতিপত্রের সংযুক্তি চেয়ে সম্পূরক পেপারবুক চেয়ে আবেদন করেছি। তাই ওইসব নথি ও কাগজ যুক্ত করে একটি সম্পূরক পেপারবুক সরবরাহের আবেদন করছি। আগে এ আবেদনের নিষ্পত্তি করুন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩২৯ঘ.)