কয়লা উধাও নিয়ে দুদকের তদন্ত আইওয়াশ: রিজভী আহমেদ

কয়লা উধাও নিয়ে দুদকের তদন্ত আইওয়াশ: রিজভী আহমেদ

ঢাকা, ২৭ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : কয়লা উধাও নিয়ে দুদকের তদন্ত আইওয়াশ মাত্র এ অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

শুক্রবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, ভোটারবিহীন আওয়ামী সরকারের আমলে ক্ষমতাসীনদের মুখে উন্নয়নের জোয়ার, আর কাজে দুর্নীতির পাহাড়। বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিতে এত বিশাল পরিমান কয়লা লুটপাটের পর দুদক তদন্ত শুরু করেছে। ‘যেন রোগী মরিবার পর ডাক্তার আসিলেন’। আসলে দুদক তো সরকারের দুর্নীতি ধোয়ার মেশিন। আর বিরোধী দলের জন্য দুদক টর্চারিং মেশিন। কয়লা নিয়ে দুদকের তদন্ত আইওয়াশ মাত্র।

তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে লোপাট হয়ে গেল লক্ষ লক্ষ টন কয়লা, অথচ খনি কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। কারণ খনি কর্তৃপক্ষই ‘শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল’। আবার বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির বিপুল পরিমান কয়লা লোপাট হওয়া বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উদাসীন থাকাটা রহস্যজনক। আওয়ামী শাসনামলে এত বিপুল পরিমান কয়লা চুরিতে কেউ বিস্মিত নয়, কারণ মেগা চুরির ঘটনা কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের আমলেই ঘটে।

স্বয়ং অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন-এখন পুকুর চুরি নয়, সাগর চুরি হয়। দুর্নীতি-দু:শাসনের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগেরই। মন্ত্রী-এমপিদের তদবিরে অসাধু ব্যবসায়ী ও খনি সিন্ডিকেটই জাতীয় সম্পদ কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে না লাগিয়ে কালোবাজারে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর প্রমাণ কয়লা লোপাটের সাথে খনি দুর্নীতির তদন্তে নাম আসা প্রকল্পের একজন ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে বিদেশ যেতে ৪২ দিনের ছুটি দেয়া হয়েছে। তাই এই কয়লা লোপাটের মহা দুর্নীতির দায় সরকার বা সরকার প্রধান এড়িয়ে যেতে পারে না।

রিজভী আহমেদ বলেন, আসলে এই অবৈধ সরকারের আমলে মহা দুর্নীতি, সুপার দুর্নীতি, মেগা দুর্নীতিরই জয়জয়কার। শেয়ার মার্কেট থেকে শুরু করে পদ্মা সেতু হয়ে ব্যাংক-বীমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে প্রাইমারী স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পরীক্ষা ও সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ পরীক্ষার হাইপার দুর্নীতি মহা ধুমধামেই চলছে এই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়।

তথ্যমন্ত্রী তথ্য দিয়েছেন যে, পিয়নের চাকুরী নিতে গেলেই নাকি ১০ লক্ষ টাকা লাগে। এই ১০ লক্ষ টাকার ভাগ কে কে পায় সেটিও তথ্যমন্ত্রী জানালে ভাল করতেন। তিনি বলেন, আইন হাতে নিয়ে বেআইনী পন্থায় চালানো হচ্ছে দেশব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযান। এই অভিযান জনমনে আতঙ্কের হিম শীতল স্রোত বইয়ে দিচ্ছে।

প্রতিদিনই বন্দুক যুদ্ধের নামে চলছে মানুষ হত্যার উৎসব। মাদক অভিযান শুরু থেকে এ পর্যন্ত বন্দুক যুদ্ধে প্রায় আড়াই শত জন ব্যক্তিকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সরকারের বাহিনীগুলো গর্বের সঙ্গে মাদক বিরোধী অভিযানের কথা বলছেন জোরেসোরে। কৃতিত্ব দাবি করছেন মাদক নির্মূলের, কিন্তু জনসমাজে মাদকের ব্যাপ্তি কতটুক হ্রাস পেয়েছে তা সবাই টের পাচ্ছে। বেআইনী কর্মকান্ড বেআইনী পন্থায় দমন করা যায় না, প্রয়োজন হয় ন্যায় ভিত্তিক আইনের শাসনের প্রয়োগ।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, আমরা বারবার বলেছি-দেশজুড়ে ক্রসফায়ারের হিড়িক মূলত: দেশের জনগোষ্ঠীকেই আতঙ্কিত করা। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মনে ভয় ঢোকানোর জন্য এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযানে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৩০১ঘ.)