দয়া করে পদত্যাগ করুন, ইসিকে মির্জা আলমগীর

দয়া করে পদত্যাগ করুন, ইসিকে মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ২৭ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : একের পর এক ধারাবাহিক ‘ব্যর্থতার’ অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতেই স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের অনিয়ম ও আচরণ লঙ্ঘনের অভিযোগ জানালে কমিশন বলে আমরা চেষ্টা করছি। চেষ্টা করা তো তাদের দায়িত্ব নয়। তাদের দায়িত্ব হলো নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পদক্ষেপ নেওয়া।’

‘কিছুদিন আগে এক নির্বাচন কমিশন বলেছেন, না পারলে তারা পদত্যাগ করবেন। আমি আবারও তাদের বলব, আপনারা দয়া করে পদত্যাগ করুন। জাতি আপনাদের আর দেখতে চায় না। আপনারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই এখনই পদত্যাগ করেন,’ যোগ করেন মির্জা আলমগীর।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।

‘সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সরকার জনগণকে বায়োস্কোপ দেখাচ্ছে’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ সরকার সারা দেশে নির্বাচনের নামে জনগণকে তামাশা দেখাচ্ছে। আসলে এখন এটি আর সিটি নির্বাচন নয়, তামাশা তামাশা আর তামাশায় পরিণত হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রার্থীর এজেন্টদের গ্রেপ্তার, হামলা নির্যাতন ও নারীদের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন আমরা এত কিছু জানার পরও কেন নির্বাচনে যাচ্ছি? এর জবাব হলো, আমরা জনগণের সঙ্গে রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকতে চাই বলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। এই নির্বাচন সরকার পরিবর্তন হয় না। এ নির্বাচনই প্রমাণ করে জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, বরিশালে সরকারি দল সিটি করপোরেশনের বাইরে থেকে লোকজন এনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে মহড়া দিচ্ছে। অথচ আমাদের প্রার্থীর সমর্থকদের মামলা, হামলা দিয়ে নির্যাতন করছে। বড় বড় নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। যেটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিপন্থী।

‘সরকারি দল ও প্রশাসনের আচরণে বরিশাল নগরী এখন ভোটের উৎসবের নগরী নয়, ত্রাসের নগরীতে পরিণত হয়েছে। অথচ হাইকোর্ট বলেছেন, নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত কাউকে হয়রানি না করতে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশও মানছে না তারা।’

পুলিশ নির্বাচন কমিশনের কথা শুনছেই না। শুধু শুনছে না এমন নয়, তারা পুলিশকে কথা শোনানোর যোগ্যতাও রাখেন না বলেও মন্তব্য করেন মির্জা আলমগীর। তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে এখনো অনুরোধ জানাব নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করুন। গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করুন। আর তা না হলে আপনারা পদত্যাগ করুন।’

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্য করেছি। আর সেটি জাতীয় নির্বাচনের জন্য। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তারা (জামায়াত) সিলেটে এখনো প্রার্থী রেখেছেন। সেটি রাখতেই পারেন। কারণ সব দলের রাজনীতি করার অধিকার আছে, নির্বাচনের অধিকার আছে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি। যদিও তাদের সঙ্গে এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি।’

জামায়াতের সমর্থন ছাড়া বিএনপি সিলেটে জিতবে কি না জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘১৯৯১ সালে একক নির্বাচন করে সরকার গঠন করেছি। তখন কারো সমর্থন দরকার পড়েনি। তারা তাদের কাজ করছে আমরা আমাদের কাজ করছি।’

জামায়াত আশা করছে, বিএনপি তাদের সমর্থন দেবে—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘তারা আশা করতেই পারেন। আমরা তো কারো আশাতে বাধা দিতে পারি না।’

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯৫৫ঘ.)