সড়ক পরিবহন আইন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আরেকটি প্রতারণা: মির্জা আলমগীর

সড়ক পরিবহন আইন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আরেকটি প্রতারণা: মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ৭ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নতুন প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আরেকটি প্রতারণা।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, কোটা থাকবে না। কিন্তু পরে তিনি আদালতের দোহাই দিয়ে তার সে ঘোষণা থেকে ফিরে আসেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেনি। এতেও কোটা আন্দোলনের মতো একটি প্রতারণা করল সরকার। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে কাউকে চাপা দিয়ে হত্যা করলে ফাঁসির শাস্তি। কিন্তু নতুন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে মাত্র পাঁচ বছর।

মির্জা আলমগীর বলেন, নতুন প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন আমরা অসঙ্গতিপূর্ণ বলছি। কারণ এ আইনে পরিবহন মালিকদের শাস্তির বিষয়ে কোনো কিছু বলা নেই। যদিও এ আইন এখনো পাস হয়নি। আমরা আশা করব, আইনটি পাস হওয়ার আগে সরকার শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আইনে সংযুক্ত করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি ২০ দলের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। ২০ দল আশা করেছিল, সরকার আন্দোলনকারীদের ৯ দফা দাবি মেনে নেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছিল সেটি বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু সরকার তা না করে পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, পুলিশ ও সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠনগুলো যে হামলা চালিয়েছে আমরা ২০ দলের পক্ষ থেকে তার তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বিশিষ্ট আলোকচিত্র শিল্পী শহিদুল আলম ও আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছে ২০ দল।

এ ছাড়া ২০ দলের সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক যে মামলা করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।

বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানির জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড রেখে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর অনুমোদন দেওয়া হয়।

তবে যদি হত্যার উদ্দেশ্যে কেউ গাড়ি চালায় এবং সেটা প্রমাণিত হয়, তাহলে তা ফৌজদারি আইনের দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুসারে বিচার হবে। সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনের সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে দুর্ঘটনার প্রকৃতি কী ছিল। সোমবার সকালে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এই আইনটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩০৬ঘ.)