আরিফের বিজয় মিছিলে হামলা, ছাত্রদল নেতা নিহত

আরিফের বিজয় মিছিলে হামলা, ছাত্রদল নেতা নিহত

সিলেট, ১১ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার এক ঘণ্টার মধ্যে নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার সামনে ছাত্রদলের বিজয় মিছিলে গুলিবর্ষণসহ হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা নিহত হয়েছেন। দুজন গুলিবিদ্ধসহ আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আরিফের কুমারপাড়াস্থ বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আরিফুল হক চৌধুরী তার বাসায় অবস্থান করছিলেন বলে জানা যায়।

নিহত ব্যক্তি হলেন- সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ফজলুর রহমান রাজু। রাত সোয়া ১১টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আরিফুল হক পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বিজয় মিছিল নিয়ে তার বাসার সামনে যান ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় শাহী ঈদগাহর দিক থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে কিছু যুবক এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা স্ট্যাম্প, দাসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। তখন এক যুবক সেখানে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের কর্মী উজ্জ্বল, সাবেক নেতা ফজলুর রহমান রাজুসহ তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ছয়জন আহত হন। তাদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সোয়া ১১টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। অস্ত্রধারীদের বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে।

এর আগে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপিদলীয় মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী টানা দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৮৮ ভোট। অন্যদিকে আরিফের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮৬ হাজার ৩৯২ ভোট।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান শনিবার সন্ধ্যায় এই ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণার সময় আরিফুল ইসলামকে ফোন করে অভিনন্দন জানান বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান।

শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের ১৬টি কেন্দ্রের পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এর মধ্যে মেয়র পদে ভাগ্য নির্ধারণের জন্য দুটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট নেওয়া হয়।

গত ৩০ জুলাই নির্বাচনের দিন অনিয়মের কারণে নগরীর গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ দুই কেন্দ্র ছাড়া ভোটের ফলাফল সমান হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষিত ৭ নম্বর (১৯, ২০ ও ২১) ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদেও পুনরায় ভোট নেওয়া হয় আজ।

ওই দুই কেন্দ্রে ৪ হাজার ৭৮৭ ভোটের মধ্যে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক পেয়েছেন ২ হাজার ৯২ ভোট। আর বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছেন ৫২২ ভোট।

গত ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে ১৩৪ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রের ভোট গণনায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৯০ হাজার ৪৯৬। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পান ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। ফলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর চেয়ে চার হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩৩২ঘ.)