ঢাকা, ১২ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মাধ্যমে শুধু একজন ব্যক্তির মুক্তি হবে না; তার মুক্তির মাধ্যমে দেশের ও জনগণের মুক্তি হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ৪৯তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আয়োজনে সবার রবিবার সকালে নয়া পল্টন বিএনপির নেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
দোয়া মাহফিলে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নূরে আরা সাফা, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা দলের সভানেত্রী পিয়ারা মোস্তফা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভানেত্রী রাজিয়া আলিম, সাবেক এমপি রওশনারা ফরিদ প্রমুখ।
‘অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে বের হতে পারি না সেটা ভাবলে নিজের কাছে নিজেকেই ধিক্কার লাগে’ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এখনো কেনো ঘর থেকে বের হতে পারি না? কেনো আমরা এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথের ইট, কাঠ, কংক্রিটের ধুলা উড়িয়ে দাঁড়াতে পারি না। সেটা ভাবলে নিজের কাছে নিজেকেই ধিক্কার লাগে।
তিনি বলেন, যখন বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের অফিসে অবরুদ্ধ। তখন তার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু সংবাদ শুনতে হয়েছে তাকে। তখন তিনি শেখ হাসিনার রক্ত চক্ষুর কাছে মাথানত করেননি। ভয়কে তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া তখন নির্ভীক ছিলেন। এটাই হল বেগম খালেদা জিয়ার বৈশিষ্ট্য। এটাই হল বেগম খালেদা জিয়ার ঐতিহ্য। এটা নিয়েই তিনি দশকের পর দশক জাতীয়তাবাদের পতাকা, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের পতাকা উড্ডীন করেছিলেন। আজ বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন, তাকে মুক্ত করতে হবে। কারণ তার মুক্তির মাধ্যমে একজন ব্যক্তির মুক্তি হবে না। তার মুক্তির মাধ্যমে দেশের ও জনগণের মুক্তি হবে।
আরাফাত রহমান কোকোর স্মৃতিচারণ করে রিজভী আহমেদ বলেন, আরাফাত রহমান কোকো নীরবে নিভৃতে চলাফেরা করতেন। সবার সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক ছিলেন। কোনো কথা বললে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে কথা বলতেন। তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। অত্যন্ত মিতভাষী ও ক্রীড়ামোদি ছিলেন। তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন। এই ছেলেটিকে পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার কথা নয়। তার মায়ের উপর জুলুম দেখে তিনি পৃথিবী থেকে চলে গেছেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে রিজভী আহমেদ বলেন, আজকে সারা জাতি অবরুদ্ধ। কচি কচি বাচ্চাদের যেভাবে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তাদের রক্ত মাখা কেডস ও রক্তমাখা শার্ট দেখলে কার না হৃদয় ভেঙে যাবে। অথচ এই ঘটনাও ঘটিয়েছে এই পাষণ্ড সরকার।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কচি কচি বাচ্চাদের উপরে হেলমেট পরে যারা আক্রমণ করেছে প্রধানমন্ত্রী তাদের দেখতে যান, কিন্তু যারা আক্রান্ত হয়েছে সেই স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাদের দেখতে যান না। এই নিষ্ঠুর দেশে আমরা এখনো বাস করছি।
এদিকে আগামী ১৫ই আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্ম দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
কর্মসূচি:
১৫ই আগস্ট বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম দিবস উপলক্ষে তার কারামুক্তি, আশু রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনায় সারাদেশের জেলা ও উপজেলায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১১টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির সিনিয়র নেতারা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন বলে জানান রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৬১৮ঘ.)
