ভোলায় বাণীজ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাণ্ডব, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

ভোলায় বাণীজ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাণ্ডব, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ

ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ভোলায় জননেতা হেমায়েত উদ্দিন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং জনগনের ভোট প্রত্যাশা ও দোয়া কামনা করে লাগানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংযুক্ত পোস্টার ও ব্যানার বাণীজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নির্দেশে আবারো ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভোলার পশ্চিম ইলিশ্যার ৩নং ওয়ার্ডের যুবলীগের জয়েন্ট সেক্রেটারী মো: রতন অভিযোগ করে জাস্টনিউজকে বলেন, ৩নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৮-১০টি মটর সাইকেলে করে একদল যুবককে নিয়ে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজিব ওয়াজেদ জয় এবং জননেতা হেমায়েত উদ্দিনের ছবিসংযুক্ত পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দেয়। এসময় চেয়ারম্যান আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আজ বিকেলে ৫টার মধ্যে বাকি ব্যানার না নামাইলে আমাকে আটক করা হবে।

ভোলা সদর ১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন শনিবার দুপুরে জাস্টনিউজকে বলেন, আমি ভোলা সদর ১ আসন থেকে আগামী ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এলাকায় আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। যার কারণে বাণীজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নির্দেশে আজ সকালেও পশ্চিম ইলিশা এলাকায় ৮-১০ টি মোটর সাইকেলে করে একদল যুবক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংযুক্ত আমার পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে।

ছবিতে জননেতা হেমায়েত উদ্দিন

হেমায়েত উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন কারণে ভোলা ১ আসন থেকে নির্বাচিত বাণীজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। এই আসনে আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। যার কারণে তোফায়েল আহমেদ আমার নেতা-কর্মী ও সমর্থকদেরকে হুমকি দিচ্ছে এবং হয়রানি করাচ্ছে। গত ৬ জুলাই আমার পোস্টার লাগানোর সময় মন্ত্রীর নির্দেশে কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরে আমি বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়ে তাদেরকে মুক্ত করি।

তিনি বলেন, এর আগে গত ৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংযুক্ত ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার সময় স্থানীয় জনতা একজনকে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দিয়েছে। এরপর থেকে রাজাপুরে আওয়ামী লীগের কিছু হাইব্রীড নেতা আমার সমর্থকদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার সময় স্থানীয় জনতা একজনকে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দেয়

উল্লেখ্য, হেমায়েত উদ্দিন ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজারের ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার পিতার নাম (মৃত) ডা: মমতাজ উদ্দিন। ৯ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ৪র্থ। তার বাবা ভোলার রাজাপুর ইউনিয়েন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৪ সালে হেমায়েত উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ২০০২ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-ধর্ম সম্পাদক পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহ-সম্পাদক নির্বাতি হন। ২০১৬ ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের মেম্বার নির্বাচিত হন তিনি।

ছাত্র জীবণে বার বার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন জনপ্রিয় এই নেতা। তখন তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দেয়া হয়। ১৯৯৬ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রায় ২ মাস কারাভোগ করার পর তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসলে তিনি ছাড়া পান। ওই সময় তিনি অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন। তখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার ব্যয়বার বহন করেন।

হেমায়েত উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ও ৯৮ সালে একই বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাশ করেন। ১৯৮৮ সালে ভোলা জিলা স্কুল থেকে (মানবিক বিভাগ) প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন তিনি। এর পর ১৯৯০ সালে ভোলা সরকারী কলেজ থেকে এইসএসসি (মানবিক বিভাগ) প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ছাত্র জীবণে আন্দোলন সংগ্রামে সবসময়ই তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। বিপদ-আপদে সবসময় এই নেতা থাকতেন ভোলাবাসীর পাশে। যার কারণে ভোলার মানুষের কাছে তিনি এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৩০০ঘ.)