ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকারের পদত্যাগ ও কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছে দলটি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সেনা মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ হতে দেবে না।
শনিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, সরকারের মধ্যে এখন বিএনপি ভীতি কাজ করছে। এ ভীতি থেকে রক্ষা পেতে আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ভাবছে ইভিএম তাদের রক্ষা করবে, কিন্তু জনগণ তাদের রক্ষা করবে না।
মির্জা আলমগীর বলেন, আজ আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সব রাজনৈতিক দল, সংগঠনকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জনগণের দাবি আদায় করতে হবে। অপশাসনকে পরাজিত করতে হবে। জাতিকে মুক্তি দিতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা সবাইকে আহ্বান জানাব, গণতন্ত্রকামী সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হোন। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করুন। কারণ দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে বলে গেছেন এ সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য। তাই আসুন সবাই ভেদাভেদ ভুলে একটি জাতীয় ঐক্য গঠন করে এ দানবকে পরাজিত করি।
মির্জা আলমগীর বলেন, দেশে একদলীয় বাকশাল থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে বিএনপি গঠন করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যেভাবে ১৯৭১ সালে জাতির ক্রান্তিকালে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, আজ আবার সেই গণতন্ত্র সংকটের মুখে আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনের কারণে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মহাসচিব বলেন, আমাদের আজ বুকে সাহস নিয়ে, বুকে বল নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আজকের জনসমুদ্র প্রমাণ করেছে আজ বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বুকের রক্ত দিতে হবে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, দেশকে মুক্ত করতে হবে। যারা দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের রক্ত ছুয়ে শপথ নিতে হবে আমরা দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করব, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।
বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাগারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা বাতিল করতে হবে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
মির্জা আলমগীর বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে সাজা দিতে চাইছে। রায়ের আগে আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে দিচ্ছেন, এ মামলায় তারেক রহমানের সাজা হবে। তাহলে কি আপনারা আগেই গণভবনে রায় লিখে রেখেছেন। মনে রাখবেন, কোনো ষড়যন্ত্রের রায় দেশের জণগন মেনে নিবে না।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায় আপনাদের নিতে হবে। দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না। আমাদের কথা পরিষ্কার, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতেই হবে।
বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ দুপুর ২টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়। সভা শুরুর আগেই সকাল থেকে দলের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেয়। লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।
সভা শুরু পর থেকেই বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তারা তাদের বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন। তারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। মুক্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে বিএনপি।
(জাস্ট নিউজ/একে/১৮২৭ঘ.)
