'নামে-বেনামে' ফেসবুক আইডি তৈরি করতে বলার কথা অস্বীকার করলেন এইচ টি ইমাম

'নামে-বেনামে' ফেসবুক আইডি তৈরি করতে বলার কথা অস্বীকার করলেন এইচ টি ইমাম

ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশে অপপ্রচার রোধে ফেসবুকে 'নামে-বেনামে অ্যাকাউন্ট খোলার' পরামর্শ দেবার যে খবর বেরিয়েছে তা অস্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।

তিনি বিবিসিকে বলেছেন, বেনামী ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার কোনো পরামর্শ তিনি দেননি। তিনি শুধু বলেছেন তরুণ সমাজের হাতে একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলে তা ব্যবহার করে সোশাল মিডিয়ায় অপপ্রচারের জবাব দিতে এবং মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে তৎপরতা বাড়াতে।

গত বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মি. ইমাম 'নামে-বেনামে' ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দিয়েছেন বলে খবর বেরুনোর পর তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলিতে শোরগোল তৈরি হয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তিনি ঐ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গকে লক্ষ্য করে বলেন: "সোশ্যাল মিডিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বৃদ্ধিতে আপনাদের নাতি-নাতনিদের নামে-বেনামে একটার জায়গায় ১০টা কেন, প্রয়োজনে একশটা ফেসবুক আইডি খুলতে বলুন। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্পৃক্ত করুন।"

ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরির পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা 'ফেক নিউজ' বা ভুয়া খবর প্রচারে উসকানি দিচ্ছেন কিনা, তা নিয়েও সোশাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ওঠে।

"আমি জেনে শুনে কোন বেআইনি কাজ করতে বলিনি," আসন্ন নির্বাচনে সোশাল মিডিয়ার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মি. ইমাম বলেন, "সামনে সোশাল মিডিয়া একটা বিশাল ভূমিকা রাখবে। আমি তরুণদের বলেছি, তোমরা এই হাতিয়ারটাকে ব্যবহার করো।"

"আমি নাতি-নাতনির কথাটা বলেছি এই কারণে যে আমার কাছে যারা নাতী-নাতনি তারা এখন সবাই ভোটার।"

ঢাকার ঐ অনুষ্ঠানে এইচ টি ইমাম জানিয়েছেন যে সোশ্যাল মিডিয়ার বড় অংশ এখন বিএনপি-জামায়াতের দখলে রয়েছে।

এই তথ্য তিনি কোথা থেকে পেলেন? বিবিসি বাংলার তরফে এই প্রশ্ন করার পর তিনি বলেন, দেশের বাইরে জামায়াত এবং তার ছাত্র সংগঠন শিবিরের তত্ত্বাবধানে বহু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে যেখান থেকে দেশ, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি নানা বিষয়ে অপপ্রচার চালা্ছে বলে তারা অনুসন্ধান করে দেখতে পেয়েছেন

তাহলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের লড়াইয়ে আওয়ামী কী হেরে যাচ্ছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে মি. ইমাম বলেন, তিনি বিষয়টাকে সেভাবে দেখতে চান না।

"হেরে যাচ্ছি, আমি এটা বলছিনা। আমরা যাতে না হারি সে জন্য উদ্বুদ্ধ করার জন্যেই এসব কথা বলেছি," তিনি বলেন।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রচারণার ক্ষেত্রে ফেসবুক এখন এককভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী যোগাযোগ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।

আগামী নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগের এই প্লাটফর্মটি ব্যবহারের প্রশ্নে প্রধান দলগুলো এখন থেকেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এই প্রশ্নে মূলত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে থাকা মনোভাবই প্রকাশ করেছেন যেখানে তারা মনে করছেন তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ফেসবুকে অনেক বেশি সক্রিয়।

এসব বিরোধী প্রচার-প্রচারণার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ কর্মীরা ততটা তৎপর নয় বলেই দলের নেতারা মনে করছেন।

তারই প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের অনুগত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ সাইবার ব্রিগেড গড়ে তুলছে।

সাইবার ব্রিগেডের নেতারা বলছেন, এই গোষ্ঠীর মূল লক্ষ্য হবে 'গুজব প্রতিহত' করা এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক মাধ্যমে 'সরকারের উন্নয়ন' সম্পর্কে ইতিবাচক প্রচারণা চালানো। সূত্র: বিবিসি

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২২৪৮ঘ.)