সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবরের নাম ফলক উপড়ে ফেলেছে ছাত্রলীগ

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবরের নাম ফলক উপড়ে ফেলেছে ছাত্রলীগ

ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : ফাঁসির রায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপির প্রভাবশালী সাবেক নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর কবরের নাম ফলক উপড়ে ফেলেছে ছাত্রলীগ নেতারা। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর নেতৃত্বে জেলা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরাস্থ গ্রামে গিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবরের অস্থায়ীভাবে লাগানো নাম ফলক ভেঙেচুড়ে উপড়ে ফেলেন তারা।

নেতাকর্মীদের মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতা ও চট্টগ্রাম জেলা এবং রাউজান উপজেলা ছাত্রলীগের অর্ধশত নেতাকর্মী তার সঙ্গে ছিলেন।

নাম ফলক উপড়ে ফেলার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ক্ষুব্দ হয়ে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর উদ্দেশ্য বলেন, এ কাজ আমার না, এটি অনেক আগেই তোমরা যারা চট্টগ্রামে আছো তাদের করা উচিত ছিল।

এ ব্যাপারে জানার জন্য গোলাম রাব্বানীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তার ফেসবুক পেজে দেখা যায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবরের নাম ফলক উপড়ে ফেলার ৩ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। ভিডিওটি আপলোড করে ফেসবুক পেজে গোলাম রাব্বানী লিখেছেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রমাণিত, ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবরের ফলকে নামের পূর্বে লেখা ছিল শহীদ। কিন্তু যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তাদের নামের আগে শহীদ শব্দ থাকতে পারে না। এতে প্রকৃত শহীদদের অপমান হয়।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আজ সেই লজ্জায় প্রলেপ দিয়েছে। তবে একজন মৃত ব্যক্তির কবরে ছাত্রলীগের এমন কর্মকাণ্ডে ঘৃণা প্রকাশ করেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ, বিএনপির নেতাকর্মী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এক নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন, জীবিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চেয়ে মৃত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এই ফ্যাসিবাদী সরকারের তথা উত্তর চট্টগ্রামের ক্ষমতাসীন দলীয় কতিপয় নেতার কাছে অনেক বেশি আতঙ্কের। তাদের ইন্ধনেই ছাত্রলীগ মৃত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবরের নাম ফলক উপড়ে ফেলে দিয়েছে। কিন্তু সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী চট্টগ্রাম তথা উত্তর চট্টগ্রামের মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন। মৃত্যুর পরও তার নাম যেমন মানুষের হৃদয় থেকে মুছে যায়নি। তেমনি কবরের নাম ফলক উপড়ে ফেলে দিয়েও মুছে ফেলা যাবে না। মৃত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে আজীবন স্মরণ রাখবে চট্টগ্রামের মানুষ।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০০৮ সালের র্নিবাচনে চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া ও চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি সংসদীয় আসন থেকে অংশ নেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। রাঙ্গুনিয়াতে হেরে গেলেও ফটিকছড়ি, অর্থাৎ চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে বিএনপির সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। তিনি সাংসদ থাকা অবস্থায় একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার ফাঁসির রায় দেন। ২০১৫ সালের ২২শে নভেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। পরে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে গহিরাস্থ নিজ পারিবারিক কবরস্থানে তাকে কবর দেওয়া হয়।

 

(জাস্ট নিউজ/এমআই/২১১০ঘ.)